রূপকথার গল্প থেকে উঠে আসা কোন রাজকন্যার গল্প নয় আজ বরং আমরা শোনাবো সত্যিকারের এক রাজকন্যার কথা,যার কথার যাদুতে মুগ্ধ অসংখ্য মানুষ।আমেরিকার বুকে নিজেকে একটুকরো বাংলাদেশ করে রেখেছে।জ্যাকসন হাইটস হঠাৎ আলোকিত হয়ে উঠলো।যেন মনে হচ্ছিল একসাথে অনেক গুলো নক্ষত্র তাদের সমস্ত আলো নিয়ে জ্বলে উঠেছে।সব গুলো নক্ষত্রের ভীড়ে একটি ছোট্ট নক্ষত্রও ছিল কিন্তু কে জানতো ছোট্ট নক্ষত্রের আলোর রোশনাই অন্য সব নক্ষত্রকে ছাপিয়ে যাবে। আমেরিকার একটি টিভিচ্যানেল পুরো রমজান মাস ব্যাপী একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল।সেই অনুষ্ঠানের নাম ছিলো রমাদান উইথ ফাতিহা।সেই অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ছিলো ফাতিহা।আমরা যে রাজকন্যার গল্প শোনাবো বলেছিলাম সেই রাজকন্যাটির নাম ফাতিহা আয়াত।সাত বছর বয়স তার।যে বয়সে আমরা বাসায় মেহমান আসলে লুকিয়ে থাকি সেই বয়সে ফাতিহা অন্যদের শেখায়।জাতিসংঘের সদরদপ্তরে বিখ্যাত সব মানুষের সামনে বক্তব্য দেয়।ওর বক্তব্য শুনে অন্যরা বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যায়।গত ২৬ সেপ্টেম্বর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য পুত্র সজিব ওয়াজেদ জয়ের উপস্থিতিতে ফাতিহা জাতিসংঘে বক্তব্য দিয়েছে।
গণিত ও বিজ্ঞান শিক্ষায় প্রচলিত নিয়মের বাইরে নিত্যনতুন পদ্ধতির মাধ্যমে শিশুদের মধ্যে গণিত ও বিজ্ঞানের ভীতি দূর করার প্রয়াসের সে কাজ করছে।
ফাতিহা কেনেডি স্পেস সেন্টারে ২৭ বার পৃথিবীকে প্রদক্ষিণকারী বিখ্যাত নভোচারী ‘ডন থমাস’ এর সাথে ব্যক্তিগতভাবে সাক্ষাৎ করে নভোচারী হওয়ার জন্য মূল্যবান দিক নির্দেশনা গ্রহণ করে।নানা বিষয় নিয়ে ফাতিহা সচেতনতা গড়ে তুলতে কাজ করছে।আমরা যখন গাছ কাটি,আইসক্রিম খেয়ে যেখানে সেখানে খোসা ফেলে পরিবেশ নষ্ট করি ছোট্ট ফাতিহা তখন পৃথিবীকে বাঁচানোর জন্য প্রতিবাদ করে। এরই প্রেক্ষিতে গত ১২ আগস্ট বিশ্ব যুব দিবসের অনুষ্ঠানে সে জাতিসংঘে ভাষণ দিয়েছে। সেখানে সে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা যুবকদের দ্বারা বনাঞ্চল ধ্বংস ও বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধিতে এর ক্ষতিকর প্রভাব তুলে ধরে। এছাড়াও ১৬তম আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সম্মেলন ২০১৯, ইউএন ডে এবং উইমেন পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি অ্যাজেন্ডাতে অংশ নিয়ে শিশু নির্যাতন, লিঙ্গ বৈষম্য, পারিবারিক সহিংসতায় শিশুদের সমস্যা, শরণার্থী শিশুদের অমানবিক জীবন নিয়ে বক্তব্য তুলে ধরেছে।ওর বয়সীরা যখন কথা বলতেই ভয় পায় ফাতিহা তখন শিশুদের আনন্দময় শিক্ষার অধিকার নিয়ে কথা বলে।
বিশ্বব্যাপী শিশুদের দুঃখ-দুর্দশার কথা শুনে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বড় হয়ে সে এমন কিছু করবে যেন আর কোনো শিশু ক্ষুধা বা তৃষ্ণায় একটি দিনও না কাটায়। ফাতিহার মতে‘সন্তানকে মুখস্থ করাবেন নাকি আবিষ্কারের নেশা ধরিয়ে দেবেন সেই সিদ্ধান্ত আপনার’ । ছোট্ট ফাতিহা ক্ষুধা,দারিদ্র ও শিশু কিশোর কিশোরীদের জন্য নিরাপদ পৃথিবী গড়ার জন্য সবাইকে আহ্বান জানিয়েছে।এই পৃথিবীকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে হলে ফাতিহার সাথে কন্ঠ মেলাতে হবে।