সীমান্ত রক্ষীরা যেমন অতন্দ্র প্রহরীর মত সীমান্ত পাহারা দেয় তেমনি ক্যাডেট কলেজের দারোয়ানদেরও অতন্দ্র প্রহরী হতে হয়।ক্যাডেট কলেজে বাইরে থেকে কোন চোর এসে চুরি করে যাবে এমন সাহস পৃথিবীর কোন চোরের হয়নি।এমনকি ক্যাডেট কলেজ গ্রাউন্ডের ভিতর চুরি করার সাহস নেই স্বয়ং থিপ অব বাগদাদের।প্রিন্সিপাল স্যার এটুকু বলে থামলেন। তার পর বললেন ও তুমি হয়তো থিপ অব বাগদাদের নাম জানোই না।প্রিন্সিপাল স্যার যাকে এটা বলেছেন সে স্যারকে আশ্চর্য করে দিয়ে বললো না স্যার শুনেছি।টিভিতে দেখেছি।সে এসেছে ক্যাডেট কলেজের দারোয়ান পদের জন্য সাক্ষাতকার দিতে।তার নাম জমির শেখ। প্রিন্সিপ্যাল স্যার বললেন শুনে থাকলে শুনেছ দেখে থাকলে দেখেছ। এবার আসল কথায় আসি।
প্রিন্সিপাল স্যার আবার বলতে শুরু করলেন।কলেজ ক্যাম্পাসে বাইরের কোন লোক এসে কিছু চুরি করবে এমনটি কোন দিনই হবেনা।তার পরও কলেজের কোন কোন গাছের কাঠাল,কোন কোন গাছের ডাব,আম কিংবা পেয়ারা রাতের অন্ধকারে হারিয়ে যাবে।কোন ভূত নয় কোন জীন নয় মানুষই সেগুলো চুরি করে খাচ্ছে। সেই চোরদের হাত থেকে কলেজকে দেখে রাখতে হবে তুমি কি পারবে?জমির শেখ বললো অবশ্যই পারবো।যদি দেখি কোন ক্যাডেট ডাব চুরি করতে চেষ্টা করছে কিংবা কাঠাল চুরি করতে চেষ্টা করছে তবে আমি তাদের পাকড়াও করবো।যদি বেশি বাড়াবাড়ি করে তাহলে ওদের থেকে ডাব এবং কাঠালের ভাগ নেব!
নতুন গার্ড নিয়োগের উদ্দেশ্যে প্রিন্সিপাল স্যার জমির শেখের ভাইভা নিচ্ছিলেন।ভাইভার এই পযার্য়ে প্রিন্সিপাল স্যার হতভম্ব হয়ে যান।ক্যাডেটরা চুরি করে ডাব কিংবা কাঠাল খেতে চাইলে গার্ডের দায়িত্ব সেটা যেন না ঘটে আর জমির শেখ নাকি গার্ড হলে চুরি করা ডাব এবং কাঠালের ভাগ চাইবে।
প্রিন্সিপাল স্যার বললেন, এবার পরের অংশে আসি।ক্যাডেট কলেজে বাইরে থেকে কেউ সদর দরজা দিয়েও ঢোকার সাহস করবেনা আবার দেয়াল টপকেও ভিতরে আসার চেষ্টা করবেনা। তবে হা কোন কোন দুষ্টু ক্যাডেট কারণে কিংবা অকারণে দেয়াল টপকে কলেজের বাইরে যাওয়ার চেষ্টা করবে। কেউ কেউ পালিয়ে একবারে বাড়ি চলে যাওয়ার চেষ্টা করবে। তোমার দায়িত্ব হবে কেউ যেন কোন ভাবেই কলেজ থেকে পালিয়ে যেতে না পারে সেটা দেখে রাখা।তুমি কি পারবে?
জমির শেখ মুখে বিশাল হাসি এনে বললো অবশ্যই পারবো স্যার।কাউকে দেয়াল টপকে পালিয়ে যেতে দেবনা।আর কোন ক্যাডেট যদি বেশি বাড়াবাড়ি করে তবে তাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে কলেজ থেকে বের করে দেব।
প্রিন্সিপাল স্যার একবার জমির শেখের মুখের দিকে তাকালেন আরেকবার আমার দিকে।আমি ভাইস প্রিন্সিপাল।তিনি আমার মতামত চাচ্ছেন যে জমির শেখকে গার্ড হিসেবে কি নিয়োগ দেওয়া যায়?আমি কোন ভাবেই ঠিক করতে পারিনা। আপনারাই বলুন যে গার্ড ক্যাডেটের পালিয়ে যাওয়া ঠেকানোর পরিবর্তে তাকে ঘাড় ধরে বের করে দেওয়ার কথা চিন্তা করতে পারে এবং ক্যাডেটদের চুরি করা ঠেকানোর বদলে তাদের চুরির কাঠাল আর ডাবের ভাগ চাইবে বলে সিদ্ধান্ত নিতে পারে তাকে কি ক্যাডেট কলেজের গার্ডের চাকরি দেওয়া যায়? নাহ যায় না।
আমি সোজা না করে দিলাম। আমি জানি যে আমি হ্যা বললেও কিছু হবেনা না বললেও কিছু হবেনা। প্রিন্সিপাল স্যার সব সময় অন্যদের মতামত নেন কিন্তু যা করার সেটা তিনি নিজেই আগে থেকে সিদ্ধান্ত নিয়ে রাখেন। এবং জমির শেখের কপালে আর ক্যাডেট কলেজের গার্ড হওয়ার ভাগ্য হলোনা।ক্যাডেটদের কারো কারো কপাল পুড়লো অন্তত যারা পালিয়ে যেতে চেয়েছিল।জমির শেখ গার্ড হলেতো সেই পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিত। একটু রাগিয়ে দিলেই ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিত।