ক্যাডেট কাইয়ুম আমার ভাল বন্ধু।তবে দুষ্টুর শিরোমনি সে।আমরা যখন পিসিসিতে ভর্তি হলাম তখন সবার আগে আমার কাইয়ুমের সাথে পরিচয়।দেখে মনে হয়েছিল খুব সাদাসিধে কিন্তু আদতে পাজির পা ঝাড়া সে।এক সপ্তাহ যেতে না যেতেই টের পেয়েছিলাম এই কাইয়ুম আসলে পিসিসিতে স্মরণীয় হয়ে থাকার জন্যই এসেছে।কিন্তু আমি বুঝতে পারিনি গ্রাম থেকে আসা একটা ছেলে এতোটা দুষ্টু হয় কি করে।তাপস স্যার আমাদের বিজ্ঞান ক্লাস নিতে আসলেন।এটা সেটা পড়ানোর পর তাপস স্যার খেয়াল করলেন সজল দেয়ালের দিকে তাকিয়ে আছে।
আমি সজলের পিছনে বসা আর আমার পাশে কাইয়ুম।কাইয়ুমের ঠিক সামনে মেসবাহ।আমরা তখনো পযর্ন্ত জানতাম না যে কাইয়ুম কতটা দুষ্টু।ক্যাডেট সজল দেয়ালের দিকে তাকিয়ে আছে দেখে তাপস স্যার বললেন ক্যাডেট সজল হোয়াট আর ইউ লুকিং? সজল ইংরেজীতে তখন খুবই কাঁচা ছিল। সে বললো স্যার বাংলায় বলি?আমাদের মধ্যে মৃদু গুঞ্জন শোনা গেল।স্যার বললেন বলো।সজল বললো স্যার টিকটিকি দেখি।তাপস স্যার বুঝলেন না একটা টিকিটিকির দেখার কি আছে।
তবে তিনি যে বিজ্ঞান ভাল বুঝেন এবং বিজ্ঞানে খুবই পন্ডিত সেটা বুঝাতেই কিনা জানিনা তিনি উল্টো প্রশ্ন করলেন নাউ টেল মি হোয়াট ইজ লিজার্ড(টিকটিকি)।আমরা সাথে সাথে শিখে গেলাম লিজার্ড মানে টিকটিকি।কিন্তু টিকটিকি যে কি সেটা সজল বলতে পারলোনা।আমারও আসলে জানা নেই।সজল চুপ করে থাকলো।তাপস স্যার জানতে চাইলেন এনিবডি নো? এবার কাইয়ুম উঠে দাড়াল।স্যার আমি জানি।স্যারতো খুবই খুশি।সম্ভবত স্যার নিজেও জানতেন না তাই কাইয়ুমের উত্তর থেকে তিনিও জেনে নিতে চাইছিলেন।তিনি উৎসাহের সাথে বললেন ভেরি গুড কাইয়ুম। বলো টিকটিকি কি?
আমাদের মাথায় সাতটা আসমান ভেঙে দিয়ে কাইয়ুম বললো স্যার টিকটিকি আসলে এক ধরনের ছোট জাতের কুমির।যে ছোট বেলায় কমপ্লান খায়নি।ওর উত্তর শুনে তাপস স্যার ধপ করে বসে পড়লেন।ওদিকে বেল পড়ে গেল তাই তার আর কিছুই করার থাকলো না।
১৩ জানুয়ারি ২০১৭