রাণী এলিজাবেথ একটি বই পড়ে ভীষণ মুগ্ধ হয়েছিলেন।তার পর সেই বইয়ের লেখককে তিনি আমন্ত্রন জানালেন রাজপ্রাসাদে।তার লেখা বইয়ের ভূয়সী প্রশংসা করলেন এবং আগ্রহ প্রকাশ করলেন তার লেখা বাকি সব বই তিনি পড়তে চান তিনি যেন সেগুলোর একটা করে কপি বাকিংহাম প্যালেসে পাঠিয়ে দেন। রাণীর কথা মত লেখক তার বাকি সব বই পাঠিয়ে দিলেন।বইগুলি হাতে নিয়ে রাণী তো থ!! কারণ বইগুলি ছিলো সব গণিতের। আর লেখক ছিলেন একজন বিখ্যাত গণিতবিদ। সেই তরুণ গণিতবিদের নাম চার্লস ডজসন।
নাম শুনে অনেকেই চিনতেই পারবে না। মনে করতে পারেন এটি কোন ছদ্মনাম। আসলে এটিই তার আসল নাম কিন্তু এই নামে তিনি কম পরিচিত। তার ছদ্মনামেই সবাই তাকে চেনে।তিনি বিশ্ব বিখ্যাত লেখক লুইস ক্যারল! লুইস ক্যারল নামটা বলতেই মনে পড়ে যে বইটির কথা সেটি হলো “এলিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড” এই বিখ্যাত শিশুতোষ বইটি নিয়ে হলিউডে নির্মিত হয়েছে সিনেমা। সিনেমায় একটি গুরুত্বপুর্ন ভূমিকায় অভিনয় করেছেন বিশ্ববিখ্যাত অভিনেতা জনিডেপ।
এলিস নামে এক প্রিটিন মেয়ের গল্প এটি।সে একবার এক রহস্যময় জগতে প্রবেশ করে নানা অদ্ভুত বিষয়ের মুখোমুখি হয়। এক পার্টিতে থাকা কালিন এলিস বাগানের দিকে একটি সুন্দর খরগোশ দেখতে পেয়ে সেদিকে এগিয়ে যায়।কিছুটা কাছে গিয়ে এলিস বিস্মিত হয় কেননা সেই খরগোশটি একটি কোট পরে আছে এবং তার হাতে ঘড়ি আছে! এলিস সেটি ধরতে গেলে খরগোশটি একটি গর্তে ঢুকে যায়। এলিস সেই গর্তের মুখের কাছে মুখ নিতেই হুড়মুড় করে গর্তে পড়ে যায়। এলিসের মনে হয় সে অতল গভীরে হারিয়ে যাচ্ছে। পড়তে পড়তে সে একটি ঘরের মধ্যে গিয়ে পড়ে।
শুরু হয় এলিসের সেই রহস্যময় জগতের গল্প। এলিস দেখতে পায় সেই ঘরের মধ্যে একটি টেবিল তার উপর বেশ কিছু জিনিষ রাখা। একটুকরো পনিরও আছে আর আছে বোতল ভর্তি পানীয়। সেখানে খাওয়ার কথাও বলা আছে।এলিস যখনই পনিরেরে টুকরা থেকে খানিকটা খায় অমনি সে অনেক বড় হয়ে যায়। ছাদে গিয়ে ঠেকে তার মাথা। খুব বিপদে পড়ে সে। আবার যখন আরেকটুকরা খায় অমনি সে অনেক ছোট হয়ে যায় ফলে সে টেবিলটার উপরে যা আছে তা দেখতে পায় না।
ওই ঘরে ছিলো ছোট্ট একটি দরজা। সেই দরজা দিয়ে বের হওয়ার মতই ছোট হয়ে গিয়েছিল এলিস।কিন্তু দরজা খোলার চাবি ছিলো টেবিলের উপর। এভাবেই টানটান উত্তেজনা আর বিস্ময় নিয়ে শুরু হয়েছে এলিস ইনওয়ান্ডারল্যান্ড সিনেমাটি। এটির সিকোয়েলও বের হয়েছে।
এবার আসি অন্য ঘটনায়। লুইস ক্যারল ১৮৬২ সালের জুলাইয়ে ছোট নৌকায় করে সঙ্গীদের নিয়ে ঘুরতে গিয়েছিলেন। অক্সফোর্ড থেকে গডস্টো পর্যন্ত ছিল সেই যাত্রা।
আর এই যাত্রা থেকে ১৮৬৫ সালে জন্ম নিয়েছিল অ্যালিসেস অ্যাডভেঞ্চার ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড উপন্যাসটি।সেই যাত্রায় ক্যারলের সাথে ছিল তাঁর বন্ধু পাদ্রী রবিনসন ডাকওয়ার্থ এবং ক্যারলের কাছের বন্ধু হ্যারি লিডেলের ছোট্ট তিন বোন এডিথ (৮), এলিস (১০) ও লরিনা (১৩)।
আর এই তিন বোনকে দেখেই অদ্ভুত এক খেয়ালি গল্প ফেঁদেছিলেন ক্যারল, যার মূল চরিত্র ছিল এলিস। কল্পনায় বিভিন্ন উদ্ভট চরিত্রের সাথে দেখা হয় এলিসের। আর এসব চরিত্র নিয়েই গড়ে ওঠে তার জগৎ।
আশা করি সিনেমাটি ছোটদের দারুণ পছন্দ হবে এবং ছোটদের পাশাপাশি বড়রাও খুব পছন্দ করবে।
–জাজাফী
২৮ জুন ২০১৯