ফোর্থ গ্রেডে পড়ুয়া একটা ছেলের হাতে যদি এক মিলিয়ন ডলার ধরিয়ে দেওয়া হয়
তাহলে কি করবে সে? কয়দিন লাগবে খরচ করতে? সারা জীবন? নাকি কয়েক মাস কয়েক
বছর?
সবাইকে অবাক করে দিয়ে মাত্র এক সপ্তাহেরও কম সময়েই এক মিলিয়ন ডলার খরচ করে ফেলতে একটু চিন্তাও করতে হয়নি প্রিষ্টন ওয়াটারের।
প্রিস্টন ওয়াটার নামে ১১ বছরের একটা ছেলে। একদিন সে সাইকেল চালিয়ে বাড়ী ফিরছিল। হঠাৎ একটা গাড়ি তার সাইকেলে প্রচন্ড জোরে ধাক্কা দিল। আর সাথে সাথে ও ছিটকে পড়ে গেল। প্রিস্টনের অবশ্য কিছু না হলেও ওর সাইকেলটা আর চালানোর মত রইলোনা। লোকটা একটু বকাঝকা করে পালিয়ে যেতে চাইছিল কিন্ত প্রিস্টন ওয়াটারস এর বন্ধু তাকে বাধা দিল। ক্ষতিপূরণ ছাড়া সে লোকটাকে যেতে দেবেনা। একে একে অনেক লোক জড়ো হলো। শেষে লোকটা একটা চেক বের করে তাতে ওর ক্ষতিপূরণ দিতে গেল। ঠিক এমন সময় দেখলো পুলিশ আসছে এই দেখে লোকটা তাড়াহুড়ো করে চেকে টাকার অংক না লিখেই প্রিস্টনের হাতে দিয়ে বিদায় নিল। বন্ধুরা ভাবতেও পারবেনা প্রিস্টন সেই ব্লাংক চেক নিয়ে কি করেছিল।
ও ছিল কম্পিউটারে ভীষন এক্সপার্ট আর তাই সেন্টাল ব্যাংকের সার্ভারে ঢুকে ওই একাউন্টে সার্চ দিল। প্রথমে ১০০ ডলার তার পর ও যখন দেখলো একাউন্টে ১০০ ডলার আছে সাথে সাথে ও সার্চ দিল দশ হাজার ডলার। প্রিস্টনের মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছিল। দেখা গেল ওই লোকটার একাউন্টে দশ হাজার ডলারও আছে। শেষে প্রিস্টন লিখবো লিখবো করে ১ মিলিয়ন ডলার লিখে সার্চ দিল। প্রিস্টন ওয়াটার কি দেখলো তা কি কেউ কল্পনা করতে পারবে? সে দেখলো সেই লোকটার একাউন্টে সত্যি সত্যি ১ মিলিয়ন ডলার আছে।
তুমি আমি হলে কি করতাম? এতো এতো ডলার আছে দেখে বেহুশ হয়ে পড়ে যেতাম। প্রিস্টন ওয়াটার কিন্তু বেহুশ হয়নি। মাত্র এগার বছর বয়সী এই ছেলেটি কি করলো তা ভাবতেই অবাক লাগে। সে সত্যি সত্যি তার সেই ব্লাংক চেকে ১ মিলিয়ন ডলার লিখে ক্যাশ হিসেবে চেক প্রিন্ট করে নিল। পরদিন সকালে সে সেন্ট্রাল ব্যাংকে গেল। ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার দিকে খানিকক্ষণ তাকিয়ে থাকলো। তারপর সে যখন এক মহিলার কাছে চেকটা দিল মহিলা দেখেতো থ। সে ভাবলো বাচ্চা ছেলেটা মশকরা করছে। তাই সে ব্যাংকের ম্যানেজারের কাছে প্রিস্টনকে এবং সেই চেকটা নিয়ে গিয়ে তাকে সব বললো।
ম্যানেজার মহিলাকে বিদায় করে দিয়ে প্রিস্টনের
সাথে কিছুক্ষণ কথা বললো। তারপর কি হলো? ম্যানেজার চেকটা ছিড়ে ফেললো। বেচারা
প্রিস্টন ওয়াটার যে আশায় চেকটা প্রিন্ট দিয়ে নিয়ে গিয়েছিল তার কি হলো?
তোমরা হয়তো ভাবতে পার সে হতাশ হয়ে ফিরে এসেছিল আসলে তা নয়। ম্যানেজার চেকটা
ছিড়ে ফেলেই সব ডলার মানে ১ মিলিয়ন ডলার ওকে দিয়ে দিল। ও ব্যাগ ভরে সেই
ডলার বাসায় নিয়ে আসলো। ওদিকে লোকটা ডলার উঠাতে গিয়ে দেখলো তার একাউন্ট
ফাকা। সে রাগে ম্যানেজারকে ধরে নিয়ে আসলো এবং সবাই মিলে বেরিয়ে পড়লো
প্রিস্টন ওয়াটার নামে এগার বছরের ছেলেটাকে যে ব্লাংক চেক দিয়ে তাকে ফতুর
করে দিয়েছে।
কি করেছিল এতো টাকা?
প্রিস্টন ওয়াটার কিন্ত খুব চালাক আর ভীষন স্মার্ট তাইতো মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে সে সব ডলার খরচ করে ফেললো। কিভাবে খরচ করলো এত ডলার? এত ডলার আমাদের কাছে দিলোতো গুনেই শেষ করতে এক মাস লেগে যেত তাহলে সে কিভাবে খরচ করলো? সে দামি দামি শপিংমলে গেল শপিং করলো। দামি দামি গেম খেললো। ইচ্ছে মত খাবার খেল। বড়লোকদের নিয়ে পার্টি দিল আর একটা অফিস খুলে বসলো। সেই অফিসের মালিক মি.ম্যাকিনটোশ।
আসলে
ওর কম্পিউটার মনিটরটা ছিল ম্যাকিনটোশ ব্র্যান্ডের সেই বুদ্ধি করে এই নামটা
বেছে নিল। সব কিছু করে গেল মি.ম্যাকিনটোশের নাম করে। কেউ জিজ্ঞেস করলেই
বলতে সে মি.ম্যানিকটোশের সহকারী। এভাবেই সে সব টাকা খরচ করে ফেললো। আসলেই
কি মি. ম্যাকিনটোশ নামে কেউ ছিল? সব শেষে প্রিস্টন ওয়াটারস কে কি সেই চেকের
মালিক ধরতে পেরেছিল? জানতে হলে দেখতে হবে অসাধারণ থেকে অসাধারণ এই সিনেমা ”
ব্লাংক চেক” সিনেমার প্রতিটা অংশে আছে অন্যরকম আনন্দ আর উত্তেজনা। যা না
দেখলে সিনেমা দেখার সার্থকতাই থাকবেনা।
…………………………………………………………………….
ব্লাংক চেক”
ক্যাটাগরিঃ শিশুতোষ
মুক্তির সনঃ ১১ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৪
পরিচালকঃ রুপার্ট ওয়াইনরাইট
মূল লেখকঃ ব্লেক স্নেইডার
দৈর্ঘ্যঃ ৯৪ মিনিট