কংক্রিটের শহরে উচু উচু দালান।সকালের সুর্যটা এখন আর চোখে পড়েনা।ভোর হতে না হতেই আগে যখন আমাদের চোখে সুর্যের সোনালী আলো এসে পড়তো এখন সেই আলো দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হয় বেলা দশটা বা তারও বেশি সময় পযর্ন্ত।সুর্যের আলো দেখার আগেই অবশ্য আমাদের বেরিয়ে যেতে হয় অফিসে কিংবা কাজে।সাত সকালে না বের হলে সময় মত অফিসে পৌছা কোন ভাবেই সম্ভব নয়।রাস্তায় যে পরিমান যানজট থাকে তা কাটিয়ে কর্মস্থলে পৌছা রীতিমত এক একটি যুদ্ধ জয়ের সমান।কর্মস্থলে যাওয়ার সময় বাড়িতে যাদের রেখে আসি তারা কি তবে খুব আনন্দে দিন পার করে?ঠিক সেরকমটি ভাবার কোন কারণ নেই।ছেলে মেয়েরা ঘুম ঘুম চোখে কাধে ভারি ব্যাগ ঝুলিয়ে স্কুলে ছোটে।নিজের শরীরের চেয়েও কখনো কখনো ভারি হয়ে ওঠে সেই ব্যাগ।ওদের আর দোষ কি?অপ্রয়োজনীয় বইয়ের বোঝাতো আমরাই চাপিয়ে দিয়েছি ওদের কাঁধে।ছেলে মেয়েদের সাথে সাথে বের হতে হয় ঘরের গৃহিণীদের।সন্তানকে স্কুলে দিয়ে বসে থাকতে হয় ঘন্টার পর ঘন্টা।এই সময়টাতে তারা কি করে?একে অন্যের সাথে গল্প করে সময় কাটায়।গল্পে আমাদের দেশের সমাজ ব্যবস্থা,রাজনীতি,অর্থনীতি,শিক্ষা ব্যবস্থা,খেলাধুলা কিংবা ইতিহাস ঐতিহ্যের কিছুই উঠে আসেনা।তাদের আলোচনার বিষয় হয়ে ওঠে পারিবারিক টানাপোড়েন নয়তো সিরিয়ালের কথা।এবং যখন সিরিয়ালের কথা ওঠে তখন অবধারিত ভাবেই সেটা কলকাতার বাংলা চ্যানেল গুলোয় প্রচারিত সিরিয়াল প্রাধান্য পায়।কংক্রিটের এই শহরে বিনোদন বলতে গৃহিণীদের কাছে সিরিয়ালটুকুই সম্বল।
বিকেলে সন্তানের হাত ধরে ফুরফুরে হাওয়ায় হাটতে বের হওয়ার ফুসরত কোথায়।এ শহরে খোলা হাওয়ার হাটার মত রাস্তা নেই,পার্ক নেই,বিনোদনের মত পযার্প্ত যায়গা নেই।পার্ক যা দু একটা আছে তাও কোন না কোন ভাবে দখল হয়ে আছে।খেলার মাঠ যা দু একটা আছে তাও কোন না কোন ক্লাব দখল করে রেখেছে তাদের ক্লাবে ভর্তি ছেলে মেয়েরাই শুধু সেখানে খেলার সুযোগ পায়।অন্যদিকে সন্তানের স্কুল ছুটি শেষেও ছুটি মেলেনা মা সন্তানের।স্কুল শেষে কোচিং তার পর বাসায় ফিরে হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হতে না হতেই বাসার কলিংবেল বেজে ওঠে।ঠায় দাড়িয়ে আছে গৃহশিক্ষক।গৃহশিক্ষক বিদায় নিতে না নিতেই হোমওয়ার্ক নিয়ে ব্যস্ত হতে হয় সেই সাথে মাকেও ব্যস্ত হতে হয় পাশে বসে ছেলে মেয়েকে সাহায্য করা এবং ঘরের রান্না বান্না সব করা।রাতে ঘুমানোর আগে বাচ্চারা হয়তো টিভি ছেড়ে একটু কার্টুন দেখে নয়তো মোবাইলে বা কম্পিউটারে একটু গেম খেলে।তাদের অবসর বলতে সাপ্তাহিক ছুটির দিন কিন্তু সেটাও হয়তো তারা জমে থাকা হোমওয়ার্কের পিছনে ব্যয়করে। অন্যদিকে গৃহিনীরা ছুটির দিনে বসে বসে পছন্দের সিরিয়াল দেখে। কেননা বিনোদন বলতে টিভি ছাড়া তো এ শহরে আর তেমন সহজলভ্য কিছুই নেই।
উইকিপিডিয়ার তথ্য মতে বর্তমান বাংলাদেশে বেসরকারী ২৯টি টিভি চ্যানেল চালু আছে।এর মধ্যে ১৯টি চ্যানেল নিজেদের বিনোদোন চ্যানেল বলে পরিচয় দিয়ে থাকে বাকি ৮টি চ্যানেল খবরের চ্যানেল হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকে।অন্যদিকে গানবাংলা নামে একটি গান ভিত্তিক চ্যানেলও সম্প্রচার হচ্ছে।
কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে এ শহরের ঘরে ঘরে টিভি চললেও ঘুরলে দেখা যায় এই ২৯টি চ্যানেলের খুব কম সংখ্যক চ্যানেলই আমার দেখি।আমাদের পছন্দের তালিকায় বরাবরই বিদেশী চ্যানেল বিশেষ করে ইন্ডিয়ান বাংলা চ্যানেলগুলো প্রাধান্য পাচ্ছে।এর প্রধান কারণ কী হতে পারে? আমাদের চ্যানেলে প্রচারিত অনুষ্ঠান কি তুলনামূলক ভাবে ইন্ডিয়ান চ্যানেলের চেয়ে কম মানসম্মত? নাকি ইন্ডিয়ান চ্যানেলে এমন ইউনিক কিছু দেখাচ্ছে যা দর্শক লুফে নিচ্ছে কিন্তু আমরা সেরকম আকর্ষণীয় কোন অনুষ্ঠান তৈরি করতে পারছিনা ফলে দর্শক আমাদের দেশীয় চ্যানেল কম দেখছে।ইন্ডিয়ান বাংলা চ্যানেলগুলো ঘুরে দেখতে পাই সেখানে সিরিয়াল প্রচার হচ্ছে এবং সেই সিরিয়ালগুলোর বিষয়বস্তু সমাজে বিশৃংখলা তৈরিতে গুরুত্বপুর্ন ভূমিকা রাখতে পারে কিংবা বলা চলে রাখছে।অধিকাংশ চ্যানেল যে সব সিরিয়াল প্রচার হচ্ছে তাতে পারিবারিক কলহ এবং সেই কলহকে কিভাবে আরো জোরালো করা যায়,কিভাবে কুটনামি,ষড়যন্ত্র করা যায় সেসবই দেখাচ্ছে।আর সেটা টেনে এতো লম্বা করছে যে কোন কোন সিরিয়াল একাধারে ৫ বছর চললেও শেষ হচ্ছেনা এবং কবে শেষ হবে তা আমাদের কারো জানা নেই। সেই সব সিরিয়াল থেকে আমাদের মেয়েরা কি শিখছে তা অবশ্য বলাই বাহুল্য।
অন্যদিকে আমাদের দেশের চ্যানেল গুলোর অনুষ্ঠান গুলোর দিকে তাকালে দেখতে পাই অনুষ্ঠান বিশেষ করে নাটক গুলো খুব একটা মান সম্মত না হলেও একেবারে ফেলে দেবার মত নয়।তার পরও কেন তাহলে দর্শক সেসব থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে?এর প্রধান কারণ ত্রিশ মিনিটের নাটকের মাঝে চার বার বিজ্ঞাপন দিচ্ছে ফলে দর্শক এমনিতেই বিরক্ত হচ্ছে।তারা ভেবেই পাচ্ছে না যে তারা কি আসলে নাটক দেখছে নাকি বিজ্ঞাপন দেখছে?ইন্ডিয়ান চ্যানেল গুলোতে এই কাজটি খুবই গুরুত্বের সাথে নিয়েছে।তারা বিজ্ঞাপন বিরতি খুব কম দেয় এবং দিলেও সময় দেখানো হয় ফিরে আসছি আর এতো মিনিট পর যা দর্শককে বুঝতে শেখায় তুমি এর মাঝে কিছু কাজ করলেও তোমার পরবর্তী অংশ বঞ্চিত হওয়ার কোন কারণ নেই।ঠিক এতো সময় পর তুমি ফিরে আসলেই দেখতে পাবে।আমাদের দেশে সেরকম কোন বালাই নেই।বিজ্ঞাপন শুরু হলে তা থামার কোন নাম নেই।এর পর আসি অন্য দিকে।আমাদের যে সব চ্যানেল বিনোদন চ্যানেল বলে পরিচিত সেগুলোতে প্রতি ঘন্টায় সংবাদ পরিবেশিত হচ্ছে পাশাপাশি নিচেয় স্ক্রলিং করে সংবাদ শিরোণাম দেখানো হচ্ছে।ইন্ডিয়ান বিনোদন চ্যানেলে কোন দিন সংবাদ পরিবেশিত হয়েছে কিংবা নিচে স্ক্রলিংএ সংবাদ শিরোণাম দেখানো হয়েছে এমন কোন নজির অন্তত আমার চোখে পড়েনি।
সুতরাং বিনোদন চ্যানেলে কেন সংবাদ পরিবেশিত হবে এটাই আমাদের বোধগম্য নয় এর ফলেও দর্শক এই সব বিনোদন চ্যানেলগুলোকে এড়িয়ে চলছে।দেশে ৮টি সংবাদভিত্তিক চ্যানেল থাকার পরও বিনোদনকেন্দ্রীক চ্যানেল গুলোতে কেন সংবাদ পরিবেশন করতে হবে তার কোন যুক্তি আমরা খুঁজে পাইনা।অবশ্য একটা যুক্তি দেওয়া যেতে পারে যে সংবাদের সময়ও বিজ্ঞাপন পাওয়া যাচ্ছে তা দিয়ে ভাল আয় হচ্ছে।
সিএনএন,বিসিসি বা অন্যান্য দেশের সংবাদ চ্যানেলগুলোর দিকে তাকালে দেখতে পাই সেখানে বিজ্ঞাপন নামে দর্শক হয়রানি করা হয় না। কিন্তু আমাদের দেশের কী সংবাদ ভিত্তিক চ্যানেল আর কী বিনোদোন কেন্দ্রীক চ্যানেল সবাই সংবাদ পরিবেশন করছে আর সব থেকে হাস্যকর ব্যাপার হলো সংবাদ শিরোনাম প্রচার করছে কোন এক স্পন্সর কোম্পানীর নামে,বিরতিতে যাচ্ছে কোন এক স্পন্সর কোম্পানীর নামে বিরতি থেকে ফিরে এসে যে সংবাদ পরিবেশিত হবে তাও অন্য কোন না কোন স্পন্সর কোম্পানীর নামে।টিভি চ্যানেল মালিকেরা সম্ভবত কখনো এটা নিয়ে মাথা ঘামায় না।তাদের চিন্তা হলো টাকা আয় করতে হবে তাই যেখানে খুশি সেখানে বিজ্ঞাপন জুড়ে দেব।এর ফলে আজকাল দর্শক সংবাদ শুনতেও ত্যাক্ত বিরক্ত হচ্ছে।এর বাইরে সারাক্ষন টিভি চ্যানেলের নিচেয় স্ক্রলিংয়ে নানা সংবাদ শিরোণাম যাওয়ার পাশাপাশি স্ক্রিনের বিভিন্ন স্থানে নানা আকারের বিজ্ঞাপন দেখা যাচ্ছে যা খুবই দৃষ্টিকটু এবং বিরক্তির কারণ। এর ফলে স্বভাবতই দর্শক বিশেষ করে মেয়েরা নিরবিচ্ছিন্ন বিনোদনের জন্য ইন্ডিয়ান চ্যানেলের দিকে ঝুকে পড়ছে।
এখন আসি অন্য প্রসংগে।মেয়েদেরকে দোষ দিয়ে কোন লাভ নেই।তারা ইন্ডিয়ান চ্যানেলই যে শুধু দেখে তা কিন্তু নয়।বিজ্ঞাপনের যাতাকলে না পিষলে তারা এদেশীয় চ্যানেলও দেখতে আগ্রহ দেখায়।সুলতান সুলেমান বা ইউসুফ জুলেখা সিরিজ যে টিভি চ্যানেলগুলো প্রচার করেছে তাদের টিআরপি কতটা উপরে ছিল তা একটু খতিয়ে দেখলেই বুঝা যাবে।আমি নিজে আমার আপার বাসায় গিয়েছি এমন সময় সুলতান সুলেমান শুরু হলে তাদেরকে দেখেছি ইন্ডিয়ান চ্যানেল থেকে চোখ সরিয়ে ফিরে আসছে সেই চ্যানেলে কারন সেটি তাদের কাছে আরো আকর্ষনীয় হয়েছে।সেখানে তুলনামূলক ভাবে বিজ্ঞাপনও কম ছিল।যদিও আমাদের দেশের অনেকেই বিদেশী সিরিয়াল প্রচারে দ্বিমত পোষণ করেছিলেন তার পরও মনে হয় ওই সিরিয়ালগুলোই কিছু সময়ের জন্য হলেও এদেশের অগণিত দর্শককে ইন্ডিয়ান চ্যানেল থেকে ফিরিয়ে আনতে পেরেছিল।
চ্যানেল সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে কি কোন নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে কিনা এটা ভাবার অবকাশ নেই।কেননা চ্যানেল সংখ্যা অনেক বাড়লেও তার মধ্য থেকে একটা দুটো কি আমাদের দর্শকদের টেনে রাখতে পারতো না? এতো চ্যানেল থাকার পরও তাহলে কি করে ইন্ডিয়ান চ্যানেলের দিকে আমাদের ঝোক বেশি?কারণ আমাদের চ্যানেল আমাদের দর্শকদের চাহিদা এবং পছন্দ অনুযায়ি না কোন অনুষ্ঠান প্রচার করতে পারছে না তারা বিজ্ঞাপন কমাতে পারছে।যে অনুষ্ঠানই প্রচার হোকনা কেন সেটা বিজ্ঞাপনের ফাদে আটকা পড়ে দর্শক হারাচ্ছে।
বিনোদন চ্যানেলের নাম করে সংবাদ প্রচার কোন ভাবেই যুক্তিযুক্ত নয়।আমাদের গলা বড় হয়ে গেছে তাই টেবিলে সাজিয়ে রাখা সব খাবারই আমরা খেতে চাইছি।আমাদের টিভি চ্যানেলগুলোও সেরকমই সংবাদ বিনোদোন কোন কিছুই তারা বাদ দিতে চায় না।সংবাদ ভিত্তিক চ্যানেল সংবাদ নিয়ে থাকুক বিনোদোন ভিত্তিক চ্যানেল বিনোদোন প্রচার করুক তাহলে দর্শক পাওয়া যাবে এবং সেই সাথে বিজ্ঞাপন প্রচারের দিকেও নজর দিতে হবে।
গান বাংলা চ্যানেল নামে যে চ্যানেলটি আছে তাদের নীতিতে সম্ভবত তারা এখনো অটল আছে।তারা গানের চ্যানেল নাম দিয়ে সংবাদ বা অন্য কিছু প্রচার করছে না।অন্যদিকে সম্প্রতি দূরন্ত টিভি নামে আরেকটি চ্যানেল সম্প্রচার হচ্ছে তারা শিশু কিশোরদের উপযোগি বেশ কিছু অনুষ্ঠান প্রচার করছে।অন্যদিকে তাদের বিজ্ঞাপনের পরিমানও তুলনামুলক ভাবে কম।কিন্তু কথা হচ্ছে নতুন নতুন সব চ্যানেলই এরকম করে থাকে।নতুন পন্য বাজারে আসলে যেমন ছাড় চলে,নতুন বউ যেমন স্বামীর ঘরে এসে কম কথা বলে ঠিক তেমনি নতুন চ্যানেলও শুরুর দিকে কম বিজ্ঞাপন,অপেক্ষাকৃত ভাল অনুষ্ঠান এবং দর্শকদের কথাই বেশি ভাবে।কিন্তু কদিন যেতে না যেতেই তারা অন্যান্য চ্যানেলের মতই একই কাতারে নাম লেখায়।এখন দূরন্ত টিভিও যে সেই কাতারে যাবে না তার কোন নিশ্চয়তা নেই।
এটিএন বাংলার দুটো আলাদা চ্যানেল আছে।একটি বিনোদোন কেন্দ্রীক আরেকটি সংবাদ ভিত্তিক।কিন্তু অবাক হয়ে দেখি বিনোদন ভিত্তিক এটিএন বাংলাতেও সংবাদ শিরোনাম সংবাদ প্রচারিত হচ্ছে।তাহলে আলাদা করে এটিএন নিউজ নামে চ্যানেল খোলার কি দরকার ছিল?
আমাদের টিভি চ্যানেল গুলোর আরেকটি সমস্যা হলো নিজেদের তৈরি সংবাদ প্রচারের পাশাপাশি বাংলাদেশ টেলিভিশনের সংবাদ প্রচার করছে এবং বিবিসি সিএনএন বা অন্যান্য সংবাদ চ্যানেলের সংবাদও প্রচার করছে।অন্য দিকে বাংলা সংবাদ প্রচারের পাশাপাশি কোন কোন চ্যানেল ইংরেজী সংবাদও প্রচার করছে।ফলে বিনোদনের জন্য যে সময়টুকু দরকার তার দুই তৃতীয়াংশ চলে যাচ্ছে সংবাদ প্রচার এবং বিজ্ঞাপনের জন্য।ফলে দর্শকদের জন্য বিনোদন বলতে আর বাকি থাকে কি?ফলশ্রুতিতে এদেশীয় দর্শক বিশেষ করে নারী দর্শক বিদেশী চ্যানেলের প্রতি ঝুকে পড়েছে।
চ্যানেল বৃদ্ধির সাথে সাথে অনুষ্ঠান তৈরির হিড়িক পড়ে গেছে।অনেক নবীন নির্মাতা সিনেমা নাটক তৈরিতে নেমে পড়ছে।অনেক সময় দেখা যাচ্ছে কারীগরি দক্ষতা না থাকার পরও অনায়াসে নাটক নির্মান করছেন এবং সেটা সম্প্রচার হচ্ছে। ফলে সেই নাটক বা সেই অনুষ্ঠানের গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হচ্ছে না।মিরাক্কেলের অনুকরণে এদেশেও তৈরি হয়েছে অনুষ্ঠান কিন্তু তা মোটেই দর্শকের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায়নি।এমনকি দর্শক হাসানোর জন্য মিরাক্কেলের এক সময়ের বিজয়ী আবু হেনা রনির মত মানুষও অনুষ্ঠানকে জনপ্রিয় করতে পারেনি কৌশলগত অদক্ষতার কারণে।
চ্যানেল সংখ্যা বেশি হওয়ার কারণে দর্শক দ্বিধাদন্দে থাকে কোন চ্যানেল থেকে কোন চ্যানেল দেখবে কিন্তু তার পরও চ্যানেল গুলো যদি নিয়মতান্ত্রিক ভাবে সুন্দর সুন্দর পরিকল্পিত অনুষ্ঠান সম্প্রচার করতো তাহলে দর্শক তাদের পছন্দ মত অনুষ্ঠানগুলি দেখতো বলে আমি মনে করি।আমাদের দেশের নাট্য নির্মাতা,অনুষ্ঠান নির্মাতারা অনেক সময় বিদেশী চ্যানেল এবং অনুষ্ঠানের অনুকরণ করে থাকেন। অথচ আমাদের দেশে নবীন প্রবীন অগণিত লেখক কবি আছেন কখনো তারা তাদের কাছে নিত্য নতুন গল্প,আইডিয়া চায়নি কিংবা লেখক কবিদের লেখা নিয়ে যথাযথ মূল্যায়ন না করার ফলে লেখক কবি আইডিয়াবাজরাও হয়তো তাদের আইডিয়া তাদের লেখা শেয়ার করা থেকে বিরত থেকেছে।এর ফলে অনুষ্ঠানের মানও বাড়ছে না।এখন সময় এসেছে টিভি চ্যানেলগুলোকে দেশ এবং দেশীয় দর্শকের কথা বিবেচনা করে ভাল মানের অনুষ্ঠান নির্মানে ব্রতি হবে এবং বিজ্ঞাপনের পরিমাণও কমিয়ে আনতে হবে।একটি চ্যানেলে শুধু সিনেমা,শুধু নাটক,টকশো বা সংবাদ প্রচারই সব নয়।একটু চিন্তা করলে আরো নিত্য নতুন আইডিয়া নিয়ে ভিন্ন ধারার অনুষ্ঠান করেও দর্শকদের মন জয় করা সম্ভব বলে মনে করি।
টিভি চ্যানেল গুলো আমাদের দেশীয় সংস্কৃতি তুলে ধরার মাধ্যমেও অনেক অভিনব কিছু প্রচার করতে পারে।আশা করবো অচিরেই চ্যানেল মালিক এবং নির্মাতারা এ বিষয়ে চিন্তা ভাবনা করে দর্শকদের আকর্ষণীয় কিছু উপহার দিবেন।
২৭ নভেম্বর ২০১৭
ইমেইলঃ [email protected]
ওয়েবসাইটঃ www.zazafee.com