বাংলা সাহিত্যের আকাশে অসংখ্য ক্ষণজন্মা সাহিত্যিকদের মাঝে একটি অনন্য নাম সৈয়দ শামসুল হক।১৯৬৬ সালে দেশ যখন আন্দোলনে টালমাটাল,বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে বছর ঐতিহাসিক ৬ দফা দাবী উপস্থাপন করলেন ঠিক একই বছর বাংলাএকাডেমী সাহিত্য পুরস্কারে ভুষিত হলেন এক উদীয়মান তরুণ।মাত্র ২৯ বছর বয়সে বাংলা একাডেমীর ইতিহাসের সবর্কনিষ্ঠ পদক বিজয়ী সাহিত্যিক হলেন আমাদের সবর্জন শ্রদ্ধেয় সৈয়দ শামসুল হক,সব্যসাচী লেখক।বাংলা সাহিত্যে তিনি যে দৃপ্তপদে হেটেছিলেন তা অক্ষুন্ন ছিল জীবনের শেষ দিন পযর্ন্ত।তার চেয়ে কম বয়সে এখনো কেউ বাংলাএকাডেমী পদক লাভ করতে পারেনি।তিনি একাধারে কবি,ঔপন্যাসিক,নাট্যকার,কথাসাহিত্যিক হিসেবে সমান খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। বাঙ্গালী মধ্যবিত্ত সমাজের আবেগ অনুভূতি বিকার স বই খুব সহজ ভাষায় সুন্দর ভাবে তুলে ধরেছেন তিনি। আট ভাই বোনের উৎসবমুখর পরিবারের বড় সন্তান ছিলেন সৈয়দ হক।১৯৩৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলীয় জেলা কুড়িগ্রামে এক সৈয়দ পরিবারে তার জন্ম হয়েছিল।সেদিন সৈয়দ সিদ্দিক হুসাইন ও হালিমা খাতুনের ঘর আলো করে যে শিশুটির জন্ম হয়েছিল দিনে দিনে তিনি আলোয় ভরে দিয়েছেন বাংলাসাহিত্যকে।তাই তিনি কুড়িগ্রামের সৈয়দ পরিবারের উর্ধে গিয়ে বাংলাসাহিত্য পরিবারের এক খ্যাতিমান সাহিত্যিক হিসেবে সাহিত্যাকাশে সমাসীন হয়েছেন।
সব্যসাচী এই লেখকের সাহিত্যিক জীবন শুরু হয়েছিল গল্প লিখে।যতদুর জানা যায় ১৯৫১ সালে মাত্র ১৬ বছর বয়সে ফজলে লোহানী সম্পাদিত “অগত্যা” নামে একটি সাময়ীকীতে তার প্রথম লেখা গল্প “উদয়াস্ত” প্রকাশিত হয়েছিল। তবে তারও আগে কবির যখন বয়স মাত্র বার বছর তখন তিনি আনমনেই কবিতা লিখতেন।কবির সহধর্মীনী কথাসাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হকের ভাষ্য মতে কবি একবার টায়ফয়েডে সয্যাশায়ী ছিলেন তখন লিখেছিলেন
“আমার ঘরে জানালার পাশে গাছ রহিয়াছে/
তাহার উপরে দুটি লাল পাখি বসিয়া আছে” ।
সেই থেকে ক্রমে ক্রমে সাহিত্যের নানা শাখায় তার দৃপ্ত পদচারণা।তার স্কুল জীবন কেটেছে জন্মভূমি কুড়িগ্রামের মাইনর স্কুলে তার পর।যে বছর তার লেখা গল্প প্রথম প্রকাশিত হলো সেই একই বছর সেই বয়সেই তিনি মুম্বাই গিয়ে একটি চলচ্চিত্র প্রযোজনা সংস্থায় কিছুদিন কাজও করেন।ফলে এক সময় আমরা দেখতে পাই চলচ্চিত্র তথা চিত্রনাট্য রচনাতেও তিনি হয়ে ওঠেন সমান পারদর্শী।ম্যাট্টিক পরীক্ষার পর তিনি তার খাতায় প্রায় ২০০টির অধিক কবিতা লিখেছিলেন।
হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক বাবা সৈয়দ সিদ্দিক হুসাইন চেয়েছিলেন তার বড় ছেলেটি বড় হয়ে ডাক্তার হবে।তার মত হোমিওপ্যাথি ডাক্তার নয় বরং দেশজোড়া খ্যাতি হবে এমন বড় ডাক্তার।কিন্তু বাবার সেই স্বপ্ন তাকে কখনো আপ্লুত করতে পারেনি।তিনি ডাক্তার হবনা হবনা পণ করে বাড়ি থেকেই পালিয়ে বম্বে চলে গেলেন।যদি বাবার স্বপ্ন পুরনে ব্রতী হতেন তবে বাংলা সাহিত্য হয়তো সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হককে পেতো না।ছোটবেলা থেকেই তিনি ছিলেন যথেষ্ট মেধাবী।১৯৫২ সালে মুম্বাই থেকে ফিরে নিজের ইচ্ছায় ঢাকার জগন্নাথ কলেজে মানবিক বিভাগে ভর্তি হলেন।সাহিত্য তাকে কিশোর বয়সেই খুব টেনেছিল বলেই তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।এর পর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগে ভর্তি হলেও শিক্ষাজীবন শেষ করতে পারেন নি। তার প্রথম প্রকাশিত উপন্যাস “দেয়ালের দেশ” যখন প্রকাশিত হল তখন তিনি তৃতীয় বর্ষের ছাত্র।সেই অবস্থায় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মায়া কাটিয়ে বেরিয়ে এলেন।
সৈয়দ শামসুল হক তার রচনায় সমসাময়িক বাংলাদেশকে তুলে ধরতে চেয়েছেন। আগের বড় লেখকেরা সকলেই গ্রামকেন্দ্রিক উপন্যাস বা গল্প লিখেছেন। সৈয়দ শামসুল হক নতুন উদীয়মান মধ্যবিত্তের কথা ভালো করে বললেন এবং মধ্যবিত্ত জীবনের বিকারকেও তিনি ধরলেন।দীর্ঘজীবনে তিনি অনেক উপন্যাস লিখেছেন। তার অনুজ এবং তরুণ লেখকেরা প্রভাবিত হয়েছেন তার লেখায়। তাদের কাছে তিনি পরিচিত ছিলেন ‘হক ভাই’ নামে।
সৈয়দ শামসুল হকেরা যুগে যুগে একবারই জন্মে। বাংলা সাহিত্যে তিনি যা দিয়েছেন তা তাকে চিরস্মরনীয় করে রাখবে। বিশ্বের অন্যান্য সাহিত্যে সাহিত্যের কলাকৌশল নিয়ে অগণিত বই আছে।আমেরিকার অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন লেখক কবি তৈরির কোর্সও করানো হয়।প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অগণিত তরুন কবি সাহিত্যিক সেই সব কোর্সে ভর্তি হয়ে সাহিত্যের নানাবিধ কলাকৌশল আয়ত্ব করে সাহ্যিত রচনা শুরু করে।আমাদের দেশের তরুন কবি সাহিত্যিকদের সেই ভাগ্য হয়নি আমেরিকার মত দেশে গিয়ে দীক্ষা নিয়ে আসবে।কিন্তু সৃষ্টিকর্তা এদেশের অগণিত নবীন কবি সাহিত্যিকদের জন্য মহীরুহ করে পাঠিয়েছিলেন সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক কে। তিনিই বাংলা সাহিত্যের প্রথম ব্যক্তি হিসেবে নবীন কবি ও সাহিত্যিকদের জন্য ধারাবাহিক ভাবে সাহিত্যের নানাবিধ কলাকৌশল নিয়ে লিখতে শুরু করলেন। তার রচিত সেই কলাম “মার্জিনে মন্তব্য” শিরোনামে বই আকারে গ্রন্থগত হয়েছে।
বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় লেখক আনিসুল হক নিজেও সৈয়দ হকে মুগ্ধ ছিলেন, সৈয়দ শামসুল হকের প্রবন্ধ, উপন্যাস তাকেও অনেক বেশি প্রভাবিত করেছে বলে তিনি স্বীকার করেন। তিনি কেবল একজন সাহিত্যিকই ছিলেন না বরং সব কিছু ছাপিয়ে তিনি হয়ে উঠেছিলেন কবি সাহিত্যিকদের কাছে “হক ভাই”। সৈয়দ শামসুল হক কবি হিসেবেও পরবর্তী প্রজন্মের কবিদের জন্য পথিকৃতের ভূমিকা পালন করেছেন।
সৈয়দ হক ছিলেন অমায়িক।তার জন্মদিনে যখন কেউ তাকে মুঠোফোনে ম্যাসেজ দিত তিনি শত ব্যস্ততার মাঝেও প্রতিউত্তর দিতে ভুল করতেন না।এমনকি তিনি দেশের বাইরে থাকলে তার মুঠোফোনে তারই রেকর্ডকৃত কন্ঠ শোনা যেত,যেখানে বলা হত তিনি দেশের বাইরে অবস্থান করছেন।খুব জরুরী হলে তার আর্ন্তজাতিক নাম্বারে ফোন করতে। তার বিনয় প্রকাশ পেয়েছে তার কবিতাতে।
কবি তার “এপিটাফ” কবিতায় লিখেছেন
“মি কে তা নাইবা জানলে।
আমাকে মনে রাখবার দরকার কি আছে?
আমাকে মনে রাখবার?
বরং মনে রেখো নকল দাঁতের পাটি,
সন্ধ্যার চলচ্চিত্র আর জন্মহর জেলি।
আমি এসেছি, দেখেছি, কিন্তু জয় করতে পারিনি”।
কবি বলেছেন তিনি জয় করতে পারেন নি।কিন্তু তার অগণিত পাঠক মনে করেন সৈয়দ হক তার লেখা দিয়ে তার সাহিত্য কর্ম দিয়ে সবার হৃদয়ের মণিকোঠায় ঠাই করে নিয়েছেন।১৯৭০ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর রচিত কাব্যগ্রন্থ, বৈশাখে রচিত পঙক্তিমালা। আধুনিক সময়ে কোন কবির এত দীর্ঘ কবিতা বেশ বিরল। তার এই কাব্যগ্রন্থের কারণে তিনি তখন আদমজী পুরস্কার লাভ করেন।
তার আরেক বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ ‘পরানের গহীন ভিতর’ দিয়ে তিনি তাঁর কবিতায় আঞ্চলিক ভাষাকে উপস্থাপন করেছেন।আঞ্চলিক ভাষায় কবিতা লেখা যায় কিংবা সেটা জনপ্রিয়তা পায় তার প্রমান রেখে গেছেন সৈয়দ হক। আবৃত্তিশিল্পীদের কাছে আবৃত্তির জন্য কবিতার তালিকা চাইলে দেখা যায় অবধারিত ভাবেই তার পরাণের গহীন ভিতর অবশ্যই তালিকাতে আছে।
কবিতায় তার ধারাবাহিকভাবে যে অবদান তা বাংলা সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ। সৈয়দ হককে অনুসরণ করে পরবর্তী কবিরা বা তার পরবর্তী কালের কবিরা আঞ্চলিক ভাষায় কবিতা লেখার চেষ্টা করেছেন। তার ‘খেলারাম খেলে যা’ অনুকরণ করে আমাদের কথাসাহিত্যিকেরা লিখেছেন। বাংলা সাহিত্যে সৈয়দ হকের অবদানকে অস্বীকার করার কোন উপায় নেই।সৈয়দ শামসুল হকের কর্ম জীবনও ছিল বৈচিত্রময়। তার কর্মজীবনের প্রায় সাত বছর তিনি কাটিয়েছেন লন্ডনে বিবিসি বাংলা বিভাগের সাথে। ১৯৭১ সালে দেশ যখন স্বাধীনতার মুলমন্ত্রে ঐক্যবদ্ধ হয়ে হানাদার বাহিনীকে রুখে দিচ্ছে তখন তিনি বিবিসি বাংলা থেকে সেই সংবাদ বিশ্বকে জানিয়েছেন অকুন্ঠচিত্তে।
নাট্যকার হিসেবেও সৈয়দ শামসুল হক ছিলেন দারুণ সফল। বিশেষ করে তাঁর রচিত দুটি কাব্যনাট্য ‘নুরলদিনের সারাজীবন’ এবং ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’ বাংলা নাটকে একটি বিশেষ স্থান দখল করে রয়েছে। তার যে শব্দের ব্যবহার, রূপকল্প, কাব্যময়তা এবং তার সঙ্গে সঙ্গে নাটকের যে দ্বন্দ্ব-সংঘাত এই সমস্ত কিছু তিনি যেভাবে ধারণ করেছেন বাংলা নাটকে এই ঘটনা আর কেউ ঘটাতে পেরেছে বলে মনে করেন না অগণিত বোদ্ধা সমালোচক ও পাঠক এমনকি তার রচিত নাটকের অনেক অভিনেতাও তাই মনে করেন। শিল্পক্ষেত্রে সৈয়দ শামসুল হকের অবদান শুধু নাটকেই সীমাবদ্ধ নয়, তিনি চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য লিখেছেন, এমনকি চলচ্চিত্রের জন্য গানও রচনা করেছেন। পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। তাঁর রচিত ‘হায়রে মানুষ, রঙ্গিন ফানুস’ গানটি এখনো মানুষের মুখে মুখে ফেরে।বাংলা সাহিত্যিকদের মধ্যে সাহিত্যের নানাবিধ খুটিনাটি নিয়ে প্রথম লেখা লিখেছেন সৈয়দ হক। সৈয়দ শামসুল হক ভাষার ব্যবহার নিয়ে লিখেছেন ‘হৃৎকলমের টানে’ বা ‘কথা সামান্যই’ এগুলো বাংলা সাহিত্যানুরাগীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। তিনি একইসঙ্গে একজন সৃষ্টিশীল লেখক এবং ভাষার ব্যবহারে ছিলেন অত্যন্ত সচেতন।
যুগে যুগে অনেক কবি সাহিত্যিক সীমানার ওপারে চলে গেছে।চলে যাওয়ার কিছুদিন বাদেই তারা মানুষের মন থেকেও মুছে গেছে।কিন্তু সৈয়দ হক সেই মানের লেখক ও কবি ছিলেন যাদের দেহান্তর হলেও মানুষের মনে তারা দীর্ঘস্থায়ী আসন তৈরি করে রেখে গেছেন। যে লেখক শিল্প সাহিত্যের প্রায় সব শাখাতে সমান পারদর্শিতা দেখিয়েছেন তাকে বাংলা সাহিত্যপ্রেমীরা ভুলে যেতে পারবেনা। বলা যেতে পারে তিনি যদি সারা জীবনে মাত্র দুটো বই লিখতেন “পরাণের গহীন ভেতর” কিংবা “বৈশাখে রচিত পঙক্তিমালা” তাহলেও তিনি চিরস্মরণীয় হয়ে থাকতেন। তার রচিত কাব্যনাট্য “নুরুলদিনের সারাজীবন” কিংবা “পায়েল আওয়াজ পাওয়া যায়” তাকে বাংলা সাহিত্যের আকাশে স্থায়ী আসন করে দিয়েছে। তিনি ছিলেন সেই তারা যে ডুবে যেতে যেতেও আলো দিয়ে যায়। দীর্ঘদিন অসুস্থ অবস্থায় তিনি যখন দেশের বাইরে উন্নত চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তখন জানতে পেরেছিলেন তার অবস্থার খুব বেশি উন্নতি হবেনা।তখন তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন দেশের মাটিতে ফিরে যাবেন।পরাণের গহীণ ভেতর দেশের জন্য দেশের মাটিও মানুষের জন্য তার ছিল টান।তিনি হাসপাতালের বেডে বসে জীবনের শেষ দিন পযর্ন্ত অবিরাম লিখে গেছেন।বাংলা সাহিত্যকে করে গেছেন সমৃদ্ধ।
তার কবিতায় ছিল প্রেম ছিল ছিল ভাষার প্রতি মমতা।তাইতো তিনি আঞ্চলিক ভাষা তুলে এনেছেন তার অগণিত কবিতায়। তিনি লিখেছেন
“কি আছে তোমার দ্যাশে? নদী আছে? আছে নাকি ঘর?
ঘরের ভিতরে আছে পরানের নিকটে যে থাকে?”
অগণিত ভক্তকুলের পরানের নিকটে তিনি আছেন এবং চিরকাল থাকবেন।শুধু আক্ষেপ এই যে আর কোন দিন বাংলাএকাডেমীর সবুজ চত্বরে তার পদধুলী পড়বেনা। আর কোন দিন সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে বসা একুশে বই মেলাতে তাকে পায়চারি করতে দেখা যাবেনা।নজরুল মঞ্চে আর কোন দিন নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচনে দেখা যাবেন আলোর সারথীকে।সৈয়দ শামসুল হকের কলম এখন থেমে গেছে, কিন্তু তিনি যে ভবিষ্যৎ লেখকদের-কবিদের-নাট্যকারদের অনুপ্রাণিত করবেন, পথ দেখাবেন তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। তার রচিত “নিষিদ্ধ লোবান” উপন্যাসটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে রচিত হয়েছিল ১৯৯০ সালে। পরবর্তীতে সেটা নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে এবং দর্শকপ্রিয় হয়েছে। তিনি মৌলিক রচনার পাশাপাশি অনুবাদেও সিদ্ধহস্ত ছিলেন। ম্যাকবেথ,টেম্পেষ্ট,শ্রাবণ রাজা তার উল্লেখযোগ্য অনুবাদ কর্ম।
বাংলা সাহিত্যের এই ক্ষণজন্মা সৈব্যসাচী লেখক তার অগণিত সাহিত্য কর্মের স্বীকৃতি স্বরুপ দেশের প্রায় সব বড় পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। ১৯৬৬ সালে সবর্কনিষ্ঠ সাহিত্যিক হিসেবে তিনি পেয়েছিলেন বাংলা একাডেমী পুরস্কার। সেই পথচলায় আরো যোগ হয়েছে আদমজী সাহিত্য পুরস্কার(১৯৬৯),অলক্ত স্বর্ণপদক(১৯৮২),আলাওল সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৩),নাসিরুদ্দীন স্বর্ণপদক (১৯৯০) এবং ১৯৮৪ সালে দেশের সবর্চ্চো সম্মান একুশে পদকে ভুষিত হয়েছেন এই খ্যাতিমান সাহিত্যিক।একই সাথে তিনি চিত্রনাট্য,সংলাপ ও গীতিকার হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভুষিত হয়েছেন।এছাড়াও তার প্রাপ্তির খাতায় আরো অগণিত পুরস্কার রয়েছে। প্রতি বছর ২৭ সেপ্টম্বর এলে আমাদের হৃদয় তার শুন্যতায় হাহাকার করে উঠবে।তিনি আমাদের মাঝে না থেকেও থাকবেন অনন্তকাল।যতদিন বাংলা সাহিত্য থাকবে ততোদিন তার পায়ের পাওয়াজ পাওয়া যাবে। তিনিইতো দেখিয়েছেন নুরুলদীনের সারাজীবন।তিনি আছেন পরাণের গহীন ভেতর।
২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬