রমনা থানার ওসি আকরাম সাহেব চা খেতে খেতে ভাবছিলেন কী দুর্যোগ আসলো যে বেঁচে থাকাই কঠিন হয়ে পড়েছে। যারা কোটি কোটি টাকা আছে সেও বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছে আবার দিন আনে দিন খায় এমনও কেউ কেউ আছেন যারা রোগাক্রান্ত হওয়ার পর কদিন ভুগেই পুরোপুরি সুস্থ্য হয়ে উঠছেন।পত্রিকার পাতা খুলতেই মনটা ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠে।চারদিকে মহামারি যেভাবে ছড়িয়ে পড়ছে তা দেখেও মানুষ সচেতন নয়।তিনি এবং তার মত অনেকেই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে এই মহামারির সময়েও ঘরের বাইরে বের হতে হচ্ছে।কাজ করতে গিয়ে তিনি দেখেছেন অনেকেই বেহুদাই বাইরে ঘোরাঘুরি করছে। এদেরকে জেল,জরিমানার ভয় দেখিয়ে আদতে কোন লাভ নেই কারণ এরা করোনার মত ভয়াবহ মহামারিকেই ভয় পায় না সেখানে সামান্য জেল জরিমানার ভয় থাকারতো কথাই নেই। চা খেতে খেতে পত্রিকার পাতা ওল্টাচ্ছিলেন এবং শিরোনাম দেখছিলেন। খেলার পাতায় দেখলেন এই করোনার মধ্যেও রোনালদো প্রায় বিশে কোটি টাকা আয় করেছে তাও আবার ইন্সটাগ্রামে মাত্র চারটা পোষ্ট করে! আর মেসি আয় করেছে চৌদ্দ কোটি টাকা।এতো টাকা? ভাবা যায়? আমাদের দেশের সিংহ ভাগ মানুষ সারা জীবনেও এক কোটি টাকায় আয় করতে পারে না আর এরা মাত্র চারটা পোষ্ট দিয়ে বিশ কোটি টাকা আয় করে। তিনি ভাবেন তারওতো একটা ফেসবুক আইডি আছে শুধু মাত্র সময় পার করার জন্য ব্যবহার করা। অবশ্য সত্যি বলতে ফেসবুকে ঢোকার সময়ইতো তার নেই। চোর পুলিশ খেলেইতো সময় কেটে যায়। আইডিটা করা হয়েছিল সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য যেন কেউ বলতে না পারে আপনার এখনো ফেসবুক একাউন্ট নেই?!
ফেসবুক দিয়েও শুনেছেন অনেকে লাখ লাখ টাকা আয় করে।এসব নিয়ে ভাবতে গেলে তার মাথা গুলিয়ে যায়।পাতা ওল্টাতে ওল্টাতেই চোখে পড়ে কোথায় কয়টা খুন হয়েছে,কতজন ধর্ষিত হয়েছে,কত বস্তা চুরি যাওয়া চাল ধরা পড়েছে।তিনি অত্যন্ত সৎ পুলিশ অফিসার।সব সময় সত্যের পথে থাকতে চেষ্টা করেন,মানুষের উপকার করেন।ন্যায় বিচারের পক্ষে আজীবন লড়াই করতে চান। আলিশান বাড়ি,দামী গাড়ি এসবের প্রতি তার বা তার পরিবারের কোন মোহ নেই।পত্রিকায় হরহামেশাই লোভী মানুষের লোভ দেখে তার খুব অবাক লাগে।মানুষ না খেয়ে মরে যাচ্ছে,করোনাআক্রান্ত হয়ে মরে যাচ্ছে,ভয়ে মরে যাচ্ছে আর এর মাঝেও একশ্রেনীর মানুষ নির্বিঘ্নে সব কিছুকে তোয়াক্কা করে নানা রকম অপরাধ করেই চলেছে! ভাবতে ভাবতেই চাটুকু শেষ করে কাপটা টেবিলে রেখে দিলেন। পত্রিকা পড়তে ইচ্ছে করছে না।শুধু মনখারাপের খবর ছাড়া আর কিছু নেই। পত্রিকা রেখে তিনি উঠে দাড়ালেন এমন সময় এক ভদ্রমহিলা তার কামরায় ঢুকলেন।তিনি বললেন আমি একটা অভিযোগ দায়ের করতে এসেছি। আমার বাসার কাজের মেয়েটা আমার স্বর্ণের হার এবং টাকা পয়সা নিয়ে পালিয়েছে। ওসি সাহেব বললেন পাশের কামরায় গিয়ে অভিযোগ লিখিয়ে রেখে যান আমরা দেখবো। মহিলা নাছোড় বান্দা। তিনি বললেন স্যার আপনিই লিখুন এবং এর একটা ব্যবস্থা করুন।
কী আর করা! মানুষ হিসেবে তিনি অত্যন্ত ভালো মনের বিধায় আর কিছু বললেন না।তবে অভিযোগ লেখার সময় খুটিনাটি জেনে নিলেন। মেয়েটার বয়স কেমন,কতদিন হলো কাজ করছে,গ্রামের বাড়ি কোথায়,বেতন কত দেওয়া হতো সব।ভদ্রমহিলা নিজের বাসার ঠিকানা,মোবাইল নাম্বার এবং কাজের মেয়ের একটি ছবি সহ অভিযোগ লিখিয়ে চলে গেলেন। ওসি সাহেব ভাবলেন এতো ঝামেলার মধ্যে বিপদ মাথায় নিয়ে এখন আবার এই কাজের মেয়েকে খুজঁতে হবে।ওসি সাহেবকে অবশ্য বেশি বেগ পেতে হলো না।মেয়েটির গ্রামের বাড়ীর ঠিকানায় খোঁজ নিতেই মেয়েটিকে পাওয়া গেলো। খুবই অভাবের সংসার তাই বাধ্য হয়ে বাবা মা মেয়েকে সাত বছর আগে ঢাকায় ওই ভদ্রমহিলার বাসায় কাজে পাঠিয়েছিলেন। নিজেদেরই যেখানে পেট চলে না সেখানে মেয়েকে কিভাবে খাওয়া পরা দিবেন! মেয়েটার গ্রামের বাড়ী গাজীপুরের টঙ্গীতে। টঙ্গী থানার সাথে যোগাযোগ করে মেয়েটিকে রমনা থানায় আনা হলো। ওসি সাহেব তাকে নির্ভর দিয়ে বললেন তোমার কোন ভয় নেই। তোমার নামে চুরির অভিযোগ হয়েছে বলেই যে তোমার জেল জরিমানা হবে বা তুমি চোর হয়ে যাবে এমন নয়। তুমি নির্দ্বিধায় সব খুলে বলো।ওসি সাহেব মেয়েটির জড়তা এবং ভয় কাটানোর জন্য কনস্টেবল আদিলকে বলে দুটো বিস্কুট আর এক কাপ চা সাথে এ গ্লাস পানি দিতে বললেন। তবে মেয়েটি বিস্কুট বা চা কোনটাই খেলো না বরং গ্লাস থেকে ঢকঢক করে পানি খেয়ে নিলো। বুঝাই যাচ্ছে সে মারাত্মক ভয়ে আছে।
ওসি সাহেব সময় নিলেন। এর মাঝে সেই ভদ্র মহিলা সৈয়দা খাতুনকে ফোন করে জানালেন আপনার কাজের মেয়েকে আমরা থানায় নিয়ে এসেছি আপনি আসুন। খবর পেয়েই সৈয়দা খাতুন বেরিয়ে পড়লেন।তিনি যখন বাসা থেকে বের হচ্ছেন তখনও তিনি জানতেন না যে তার চুরি যাওয়া হার বা টাকা তিনি ফেরৎ পাবেন নাকি অন্য কিছু ঘটবে। এরই মধ্যে ওসি সাহেব মেয়েটির কাছ থেকে সব জেনে নিলেন। মানুষের চোখ দেখলেই তিনি বুঝতে পারেন সে সত্যি বলছে নাকি মিথ্যা বলছে। ওসি সাহেবের পুরোপুরি বিশ্বাস মেয়েটি যা বলেছে সব সত্যি বলেছে। বিগত সাত বছর ধরে সে সৈয়দা খাতুনের বাসায় থেকে কাজ করছে কিন্তু তাকে কোন বেতন দেওয়া হয়নি এমনকি ছুটিতে বাড়িতেও যেতে দেওয়া হয়নি। অবশ্য বাবা মায়ের সাথে মাঝে মাঝে ফোনে কথা বলিয়ে দিতেন। সৈয়দা খাতুন যে চুরির অভিযোগ করেছে সে সম্পর্কে মেয়েটি বলেছে সে সম্পুর্ন নির্দোষ। সে স্বর্নের চেইন বা টাকা কোনটাই নেয়নি। সে বরং নিয়মিত শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়ে অতিষ্ঠ হয়ে বাসা থেকে পালিয়েছে। এরই মধ্যে সৈয়দা খাতুন তার স্বামীকে নিয়ে থানায় হাজির হলেন। তার চোখ রাগে জ্বলজ্বল করছে যেন পুড়িয়ে ছাই করে দিবেন। ওসি সাহেব তাদেরকে বসতে বললেন। তার পর মেয়েটি যা যা বলেছে সে ব্যাপারে তাদের মতামত জানতে চাইলো। সৈয়দা খাতুনের স্বামী জনাব মোজাম্মেল হক নিরেট সাদাসিধে মানুষ। তিনি জানালেন কাজের মেয়েটির বিষয়ে তিনি তেমন কিছু জানেন না। মেয়েটিকে তার নম্রভদ্র মনে হয়েছে। কখনো কোন কিছুতে অবাধ্য হয়নি। তবে আমার স্ত্রী যেহেতু সারাদিন বাসায় থাকে সেই ভালো বলতে পারবে। আমি অফিসের কাজে বাইরে বাইরে থাকি বলে বাসায় খুব একটা থাকাই হয় না।
ওসি সাহেব সৈয়দা খাতুনের কাছে প্রশ্ন করলে তিনি মেয়েটি যা বলেছে তা সব মিথ্যে বলে অভিযোগ করলেন। তখন ওসি সাহেব বললেন আপনার বাসায়তো সিসি ক্যামেরা আছে তাইনা? তারা জানালো সিড়িতে এবং গেটের সামনে সিসিক্যামেরা আছে। ওসি সাহেব টিম সহ মেয়েটিকে সাথে করে ভদ্রমহিলা আর তার স্বামীকে নিয়ে তার বাসায় গেলেন । সিসিক্যামেরার ফুটেজ এবং বাসার দারোয়ানের কাছ থেকে জানা গেলো মেয়েটি সেদিন দারোয়ানকে বলেই বেরিয়েছে এবং সে এক কাপড়ে বেরিয়েছে। এবার ওসি সাহেব একটু কঠোর হলেন। পুলিশ হলে কঠোর হতেই হবে তবেই সত্য বেরিয়ে আসবে। হলোও তাই। চাপাচাপির পর সৈয়দা খাতুন স্বীকার করলেন যে সত্যি সত্যিই বিগত সাত বছর মেয়েটিকে কোন বেতন দেওয়া হয়নি।ওসি সাহেব আবারও ভীষণ অবাক হলেন! টাকাওয়ালা মানুষ হয়েও কি করে মানুষ গরীবদের ন্যায্য পাওনা সময় মত বুঝিয়ে দেয় না! অল্পদিনের দুনিয়ায় মানুষের এতো বেশি লোভ! মরণের সময় কেউতো সাথে করে কিছু নিয়ে যাবে না!
ওসি সাহেব সৈয়দা খাতুন এবং তার স্বামীকে কঠোর ভাষায় বললেন আপনারা যেটা করেছেন তা ঘোরতর অন্যায়। প্রথমত বছরের পর বছর তাকে দিয়ে কাজ করিয়েছেন কিন্তু বেতন দেন না। দ্বিতীয়ত তার উপর শারীরিক নির্যাতন করেছেন আর তৃতীয়ত বিনা দোষে তাকে চোর সাব্যস্ত করে থানায় ডায়েরি করেছেন। এর জন্য আপনাদের বড় শাস্তি হবে। সৈয়দা খাতুনের চেহারা সাথে সাথে মলিন হয়ে গেল। তিনি একবার স্বামীর দিকে,একবার ওসি সাহেবের দিকে আরেকবার কাজের মেয়েটির দিকে তাকাতে থাকলেন। কাজের মেয়েটির নাম আলেয়া। আলেয়ার মুখের দিকে তাকিয়ে ওসি সাহেব বুঝতে পারলেন মেয়েটির মন থেকে ভয় চলে গেছে। সে বুঝতে পেরেছে সে যে চোর না তা প্রমান হয়েছে সেই সাথে তার উপর যে জুলুম করা হয়েছে তা পুলিশ বুঝতে পেরেছে। সৈয়দা খাতুনের স্বামী বললেন স্যার কেসকাচালির মধ্যে না গিয়ে কি কোন ভাবে মিটমাট করা যাবে? ওসি সাহেব খানিকক্ষণ ভাবলেন তার পর বললেন আলেয়া এখন থেকে আর আপনাদের বাসায় কাজ করবে না এবং বিগত সাত বছরের পাওনা সব মিটিয়ে দিতে হবে। সৈয়দা খাতুনের স্বামী মোজাম্মেল সাহেব শর্ত মেনে নিলেন। সেদিনই তিনি প্রায় দুই লক্ষ টাকার একটি চেক তুলে দিলেন ওসি সাহেবের হাতে। ওসি সাহেব সেটা আলেয়াকে বুঝিয়ে দিলেন। সৈয়দা খাতুন চা দিতে চেয়েছিলেন কিন্তু ওসি সাহেব বললেন এখন চা খেতে চাই না। মনটা এমনিতেই খারাপ হয়ে আছে। তিনি বেরিয়ে পড়লেন। তার সাথে আলেয়াও বেরিয়ে আসলেন। তিনি নিজে গাড়ির টিকেট করে আলেয়াকে বাসে তুলে দিলেন। বাসে ওঠার আগে আলেয়া ওসি সাহেবের পায়ে হাত রেখে সালাম করলেন। তার চোখে পানি। ওসি সাহেবের চোখেও পানি।এক জীবনে এমন দৃশ্য তিনি খুব কমই দেখেছেন। ন্যায় বিচার দিতে গিয়েও নানা প্রমানের অভাবে তিনি ন্যায় বিচার দিতে পারেন নি, মানুষের পাশে দাড়াতে পারেন নি।
মেয়েটিকে বাসে উঠিয়ে দিয়ে থানায় ফিরে গেলেন ওসি আকরাম সাহেব।চলন্ত বাসের জানালায় মুখ ঠেকিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে মেয়েটি।সে এখন মুক্ত স্বাধীন। তার বাবার খুব ইচ্ছে ছিলো ছোট্ট একটি মুদি দোকান দিবেন তা থেকে যা আয় হবে তা দিয়ে সংসার চলে যাবে। কিন্তু টাকার অভাবে তা করতে পারেন নি। যা আয় হয় তা দিয়ে সংসারই চলে না টাকা জমাবেন কিভাবে।স্বপ্নটা তাই স্বপ্নই থেকে গেলো।আলেয়া ভাবে এই টাকা দিয়ে বাবার জন্য একটা দোকান করবে তার পর সুখে শান্তিতে বাস করবে।বাস থেকে নেমে সে সোজা বাড়িতে চলে গেলো। অনেক বছর পর মেয়েকে পেয়ে বাবা মায়ের সে কী আনন্দ।মেঝেতে পাটি পেতে বসে আলেয়া বাবার হাতে চেকটা ধরিয়ে দিয়ে বললো বাবা আমাদের আর বেশি কষ্ট করতে হবে না। যে বাড়িতে কাজ করতাম সেখান থেকে বিগত সাত বছরের বেতন একসাথে পেয়েছি প্রায় দুই লক্ষ টাকা। এটা দিয়ে তুমি দোকান করতে পারবে।বাবা মায়ের চোখে পানি এসে গেলো।মেয়েকে বুকে জড়িয়ে নিলেন।
কয়েকদিনের মধ্যেই মধুমিতা রোডে ছোট্ট একটি দোকান দিলো আলেয়ার বাবা এবং ভালো একটা সম্মন্ধ দেখে আলেয়ার বিয়ে ঠিক করলেন।আত্মীয় স্বজন খুব বেশি নেই বলে তেমন কাউকে দাওয়াত করার দরকার পড়লো না। পাড়াপ্রতিবেশী যারা আছে তারাই আসবে। আলেয়ার মনে পড়লো একজনকে তার বিয়েতে দাওয়াত দিতেই হবে তিনি হলেন ওসি আকরাম সাহেব। সেদিন বিদায় দেওয়ার সময় তিনি তার মোবাইল নাম্বার দিয়েছিলেন যেন কোন অসুবিধা হলে ফোন করতে পারে।নাম্বারটা খুঁজে বের করে আলেয়া ফোন করলো ওসি সাহেব তখন স্ত্রী কন্যাকে নিয়ে রাতের খাবার খেতে বসেছেন। ফোন রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে ভেসে আসলো একটি মেয়ে কন্ঠ। ওসি সাহেব জানতে চাইলেন কে? আলেয়া বললো স্যার আমি আলেয়া।ওসি সাহেব বললেন কোন আলেয়া? আলেয়া বললো স্যার মনে নেই একবার আমি থানায় এসেছিলাম ওই যে চোর আলেয়া! বলেই হেসে উঠলো। ওপাশ থেকে ওসি সাহেবও হাসলেন। তিনি বললেন তুমি চোর বলছো কেন? তুমিতো চোর নও! আলেয়া বললো স্যার চোর না বললে তো বুঝবেন না আমি কোন আলেয়া।তার পর সে তার বিয়ের দাওয়াত দিলো এবং অনুরোধ করলে ওসি সাহেব যেন পরিবারের সবাইকে সাথে করে তার বিয়েতে অবশ্যই উপস্থিত হয়।
করোনা ভাইরাসের কবল থেকে পৃথিবী মুক্তি পেয়েছে।যথাসম্ভব ধুমধাম করেই আলেয়ার বিয়ের আয়োজন চলছে। ওসি সাহেব একদিনের ছুটি নিয়ে স্ত্রী কন্যাকে সাথে নিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন। আলেয়া মেয়েটিকে খুবই সুন্দর লাগছে। মায়া ভরা চেহারা।ওসি সাহেবকে দেখে সে উঠে এসে পায়ে হাত দিয়ে সালাম করলো এবং বাবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলো। ওসি সাহেবের স্ত্রী আলেয়ার হাতে একটি স্বর্ণের হার ধরিয়ে দিয়ে বললেন সুখী হও মা। আমাদের পক্ষ থেকে তোমার জন্য সামান্য এ উপহার! আলেয়ার চোখে পানি চলে আসলো। তারা এতোটাই গরীব যে বিয়েতে নাকফুল ছাড়া আর কোনটাই স্বর্ণরে না। ওসি সাহেবের মেয়েটার নাম নীলা। সে এবার এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। আলেয়ার চোখে পানি দেখে সে বললো আলেয়া আপু চোখের পানি মুছে ফেলো। সাত বছর নির্মম নির্যাতন সহ্য করেও যখন তুমি কাঁদোনি এখনতো সুখের সময় এখন কেন কাঁদবে?
আলেয়া চোখের পানি মুছে নীলাকে বুকে জড়িয়ে নিয়ে বললো সাত বছরে জমে থাকা চোখের পানি আজ না হয় আনন্দ হয়ে একটু ঝরে পড়ুক।
9 জুন 2020