সিনিয়রের সাথে ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় টাচ লাগলে তাকে স্যরি বলতে হবে।গাইড হায়দার ভাই এটা শিখিয়ে দেওয়ার পর ক্লাস সেভেনের মহিবুলের মাথায় সেটা সারক্ষণ ঘুরপাক খেতে থাকলো।এটা নিয়ে সে সহপাঠী জাবেরের সাথে কথাও বলেছে। তার নাকি স্যরি বলতে ভাল লাগে কিন্তু কোন ভাবেই স্যরি বলার সুযোগ সে পেতোনা।
একদিন মোক্ষম সুযোগ আসলো। খাবার টেবিলে টি ব্রেকের সময় হঠাৎ মহিবুল স্যরি বলে উঠলো। টেবিলে সিনিয়র ছিল অনেকে। তারা হঠাৎ কোন কারণ ছাড়াই স্যরি বলা দেখে জানতে চাইলো স্যরি বললে কেন? মহিবুল তখন মুখ কাচুমাচু করে বললো, ভাই আপনার কলার সাথে আমার কাপের টাচ লেগে গেছে, তাই স্যরি বলেছি। মহিবুলের কথা শুনে সবার মুখেই চাপা হাসি দেখা গেল। তবে সিনিয়রদের ভয়ে কেউ হাসতে সাহস পাচ্ছিল না।
কিন্তু হাসি কি আর দমিয়ে রাখা যায়? কবি বলেছেন “হাসতে নাকি জানেনা কেউ কে বলেছে ভাই,এই শোন না কত হাসির খবর বলে যাই”। ক্লাস নাইন হাসি সামলাতে না পেরে হো হো করে হেসে ফেললো। অতঃপর সিনিয়রেরা ক্লাস নাইনকে ব্রেকের পর দেখা করতে বললো। কারো বুঝতে বাকি থাকলোনা কি শাস্তি হতে চলেছে। এর পর শাস্তি খেয়ে ক্লাস নাইন মহিবুলকে তলব করলো। তাকে শাসানো হলো আর যদি বে জায়গাতে স্যরি বলে তবে তার কপালে দুঃখ আছে।
এক সকালে ফলইনের সময় মহিবুল দেরি হবে ভেবে উসাইন বোল্ট গতিতে দৌড় দিল। যেন কারো দিকে তার কোন নজর নেই। সেই সময় সরাসরি ধাক্কা লাগলো হাউজ লিডার তারেক ভাইয়ের সাথে।এতো জোরে ধাক্কা লাগলো যে তাল সামলাতে হিমশিম খেতে হলো তারেক ভাইকে। নিয়ম অনুযায়ি মহিবুলের তখন স্যরি বলার কথা কিন্তু সে স্যরি না বলে দৌড়ে ফলইন হলো।
এর পর যথারীতি মহিবুলকে তলব করা হলো সে কেন স্যরি বলেনি? মহিবুল সরল মনে বললো, ক্লাস নাইনের ভাইয়েরা বে যায়গায় স্যরি বলতে নিষেধ করেছে। ওটাতো বে যায়গা ছিল! অতঃপর আবার ক্লাস নাইনের ডাক পড়লো এবং দেখা গেল এক সাথে অনেকেই ফ্রন্ড রোল দিতে দিতে এগিয়ে যাচ্ছে। ক্লাস নাইন শেষে বুঝতে পারলো মহিবুল হলো একটা কুফা,সে স্যরি বললেও দোষ না বললেও দোষ।