ক্লাস সেভেনের মাহবুবকে বললাম যাতো নাজিরকে ডেকে নিয়ে আয়।ওরে দুটো চটকানি দেই।আমি বলার সাথে সাথে জো হুকুম জাহাপনা টাইপের একটা বাউ করে ছুট দিলো মাহবুব।আমার হাউসের জুনিয়র মোষ্ট ক্যাডেট সে।আর নাজিরও আমার হাউজের।ছোট খাট একটা অপরাধ করেছে তাই ডেকে এনে চটকানি দেব বলে ভাবছি।মানুষ যেমন কোন কাজ না থাকলে হুদাই বিড়ি সিগারেটে টান দিয়ে ধোয়া ছাড়ে আমিও তেমনি কোন কাজ কাম না থাকলে কোন জুনিয়রকে ডেকে এনে শালটিং দেই।
নজরুল হাউসে নিজের রুমে বিছানায় গা এলিয়ে দিয়ে অপেক্ষা করছি নাজিরের আসার জন্য।সাথে মাহবুব ফিরে আসলে ওকে রুমে চলে যেতে বলে তার পর চটকানি দেব।আমার আবার একটু মায়া বেশি।মাহবুবের সামনে তার ক্লাসমেট কাম রুমমেট নাজিরকে চটকানি দেওয়া ঠিক হবেনা।অতোটা লজ্জা দিতে চাইনা আমি। কিছুক্ষণের মধ্যেই মাহবুব ফিরে আসলো সাথে আসলো নাজির।আমি হাতের ইশারায় মাহবুবকে চলে যেতে বললেও সে গেলো না।আমি ওর সাহস দেখে চমকে উঠলাম।পুরো হাউস যেখানে থরথর করে কাপে সেখানে পুচকে মাহবুব দাড়িয়েই আছে।আমি বললাম কিরে যাচ্ছিসনা কেন?সে বললো ভাই শুধু নাজিরকে দিবেন আমারে দিবেন না? আমি এতো কষ্ট করে ওকে ডেকে আনলাম আর শুধু ওকেই দিবেন।
আমি ওর কথা শুনে পুরো থ হয়ে গেলাম।বলে কি এই ছেলে?আমি রাগ দমিয়ে রেখে বললাম ঠিক আছে তুইও থাক তোরেও দেব।এতোই যেহেতু শখ তোর তাহলে দেবনা কেন?আমারতো কিনতে হচ্ছেনা যে দিতে অসুবিধা।শুধু তুই কেন তোর ব্যাচের সবগুলোকে দিতেও আমার অসুবিধা নেই।এবার আমি নাজিরকে কাছে ডাকলাম।নাজির হাসি মুখে কাছে এসে দাড়িয়ে বললো ভাই চাটনি দিবেন শুনলাম।তা হঠাৎ কি মনে করে চাটনি দিবেন। নাজিরের কথা শুনে আমি আরো অবাক হলাম।গাধাটাকে নাকি আমি চাটনি খাওয়াবো বলে ডেকেছি। আমি বললাম তোকে চাটনি দেব কে বলেছে? নাজির বললো ভাই মাহবুবতো আমাকে বললো ভাই তোরে ডাকছে চাটনি দেবে বলে।
আমি সাথে সাথে বুঝলাম গাধাটা কানে কম শোনে বলে আমি চটকানি বলেছি সেটাকে সে চাটনি শুনেছে। আমি বললাম আমি তোকে চাটনি খাওয়ানোর জন্য ডাকিনি,তোকে চটকানি খাওয়ার জন্য ডেকেছি। এটা বলেই ধমক দিয়ে বিশবার কান ধরে উঠবস করাতে শুরু করে দিলাম।এটা দেখে কানে কম শোনা মাহবুব থতমত খেয়ে গেল।সে একটু একটু করে দরজার দিকে সরছিল।আমি হাক দিলাম এই তুই এদিকে আয়।তুই না একটু আগে বললি কষ্ট করে নাজিরকে ডেকে এনেছিস শুধু ওকে দেব কেন তোকেও দেওয়া লাগবে। আয় তোকেও দিচ্ছি। নে তোকে একটু বেশি দিচ্ছি।তুই পঞ্চাশবার পুশ আপ দে।
হাকিম নড়ে তো হুকুম নড়েনা।সাথে সাথে চাটনি খাওয়ার মজা টের পেতে শুরু করলো মাহবুব।কানে কম শোনার পুরস্কার হিসেবে যা সে ফ্রিতে পেলো তার কোন তুলনাই হয়না।ওকে দেখে নিশ্চই নাজিরের মনটা আনন্দে ভরে গেল।ডেকে এনে যে শুধু ওকেই শাস্তি খাইয়েছে তাতো নয় বরং গায়ে পড়ে নিজেই ফেসে গেছে মাহবুব। শাস্তি শেষ হলে দুজন বেরিয়ে গেল।আমি কান পেতে শুনলাম করিডোর দিয়ে হাটার সময় নাজির বলছে কিরে চাটনি কেমন লাগলো।তুইতো আমার সত্যিকারের দোস্ত যে কিনা বন্ধুকে ছেড়ে একা একা চাটনি খেতে রাজি নয়।মনে মনে হাসি দিলাম।একটু পরেই আবার ইভিনিং প্রেপ।আজকের কোটা পুর্ন করে ফেললাম।প্রেপটাইমে ভাবতে হবে কালকে কাকে কি অছিলায় চটকানি দেওয়া যায়।
৪ মার্চ ২০১৭