আট বছর বয়সী চাওয়ালা বনাম সুঠামদেহী নিরাপত্তারক্ষির গল্প

0
740
কক্সবাজারে ৪০ বছর বয়সী একজনের সাথে পরিচয় হয়েছিল। শরীর স্বাস্থ্য যথেষ্ট ভালো। পাশাপাশি কুরআনের হাফেজ। কথা প্রসঙ্গে জানতে পারলাম তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তারক্ষি হিসেবে চাকরি করেন। বেতন সর্ব সাকুল্যে ৬৫০০ টাকা।তবুও মানুষটি বেশ হাসিখুশি। এই পরিমান বেতন পেয়েও যেন তার কোনো ভাবান্তর নেই। যেন বেশ সুখী জীবনযাপন করছেন। তার বেতনের পরিমান শুনে প্রথমেই আমার মনের মধ্যে যে প্রশ্নটি উকি দিয়েছিল সেটা হলো পরিবার নিয়ে এই বেতনে কিভাবে সংসার চালানো সম্ভব। পরে জানতে পারলাম এর পাশাপাশি তিনি দুই তিনটা টিউশনী করেন। আরবী পড়ান। তাতে আর কতইবা আয় হয়। হয়তো আরও হাজার তিনেক বা চারেক টাকা পান। সব মিলিয়ে তার আয় কোনো ভাবেই ৯ হাজার ছাড়াতে পারেনি। বাড়িতে দুধের বাচ্চা আছে। পরিবারে লোক সংখ্যা চারজন। বাসা ভাড়া,বাচ্চাদের খাবার কেনা,নিজেদের খাবার কেনা সব মিলিয়ে চারজনের সংসার ৭/৮ হাজার টাকায় চালানোর মানে হলো একটা অসম্ভবকে সম্ভব করা। তারপরও বেশ ভালোই চলছিল।
হঠাৎ একদিন দেখি লোকটা হাউমাউ করে কাঁদছে। কারণ জানতে চাইলে বুঝলাম কিছুদিন আগে মাসের বেতন হওয়ার পর রাগ করে চাকরিটা ছেড়ে দিয়েছিলেন। এখন সংসার চলছে না,বাচ্চাটা অসুস্থ্য। তাই তিনি আগের প্রতিষ্ঠানে গিয়েছেন চাকরিটা যেন তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু অফিস তার কথা আমলে নেয়নি। কেন আমলে নেয়নি সেটাও বুঝলাম। সে চাকরি ছেড়ে দেওয়ার সময় কিছুই বলেনি।অফিসের বস তাকে কিছু প্রশ্ন করেছিল ডিউটিতে অনুপস্থিত থাকা বা হাজিরা দিয়ে চলে যাওয়া বিষয়ে যা সিসিক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে। সে সম্পর্কে সে আশানুরুপ জবাব দিতে পারেনি ফলে অফিস থেকে বেশ কথা শোনানো হয়েছে বলে সে হুট করে রাগ করে চাকরি ছেড়ে দিয়েছে। এখন পড়েছে মহা বিপদে। অথচ এমন ক্ষেত্রে তার উচিত ছিলো চাকরি ছেড়ে না দিয়ে নিজের ভুল স্বীকার করে আগামীতে এমন হবে না মর্মে কথা দেওয়া। অথবা চাকরি ছেড়ে দিয়ে ওই অফিস মুখো না হয়ে নতুন কিছু জুটিয়ে নেওয়া। তাহলে আজকে তার এমন হাউমাউ করে কাঁদা লাগতো না।
এবার মূল কথায় আসি। তার মত শক্তিশালী একজন মানুষ কেন কক্সবাজারের মত একটি জায়গায় জন্ম নিয়ে, বেড়ে উঠে ৬৫০০ টাকা বেতনের চাকরি করবে? এই পরিমান টাকাতো সে চাইলে অনায়াসেই ইনকাম করতে পারে। কক্সবাজারে ১০ হাজার টাকা হেসে খেলেই আয় করা যায় বলে আমি অন্তত মনে করি। এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি,লাখ টাকা পুজি এর কোনো কিছুরই দরকার নেই। সেই বিষয়ে বলার আগে ওই নিরাপত্তারক্ষির ডিউটি টাইম সম্পর্কে একটু বলি। একজন নিরাপত্তারক্ষি হিসেবে সে যেখানে চাকরি করতো সেখানে তাকে তিনটি আলাদা আলাদা শিফটে ডিউটি করতে হতো। কখনো সকাল ছয়টা থেকে দুপুর দুইটা পযর্ন্ত আবার কখনো দুপুর দুইটা থেকে রাত দশটা পযর্ন্ত এবং তৃতীয় আরেকটি শিফট শুরু হয় রাত দশটা থেকে সকাল ছয়টা পযর্ন্ত। সকালে এবং দুপুরের শিফট মোটামুটি সুবিধাজনক কারণ তখন অফিসের ভিতরে এসির মধ্যে থাকার সুযোগ আছে। কিন্তু রাত দশটার পর যে শিফট শুরু হয় সেই সময় থেকে সারা রাত তালাবদ্ধ অফিসের বাইরে শাটারের সামনে বসে থাকতে হয়। গরম,মশার কামড় আর ঘুমানোর তেমন কোনো সুযোগ থাকে না। এতো কষ্ট সহ্য করেই শেষ নয় বরং ঈদ বা অন্যান্য দিনেও তাদের কোনো রকম ছুটি নেই,কোনো রকম ওভারটাইম নেই,কোনো রকম ঈদ বোনাস নেই। তার পরও তাকে কেন এই চাকরিটাই করতে হবে আমার মাথায় আসে না। কক্সবাজার না হয়ে অন্য কোথাও হলে আলাদা কথা ছিলো। তাছাড়াও তার মত শক্তসমর্থ যুবক না হয়ে অন্য কেউ হলেও কথা ছিলো।
আমি যেহেতু রেগুলার বীচে হাটাহাটি করি তাই বিভিন্ন ছোট ছোট ব্যবসায় নিয়োজিতদের কাছ থেকে দেখি এবং তাদের সাথে গল্পও করি। মাত্র পাঁচ বছর বয়স থেকে শুরু করে ষাট বছরের বৃদ্ধ মানুষও আছে যারা বীচ কেন্দ্রিক ব্যবসার পসরা সাজিয়েছে। এই ব্যবসার জন্য লাখ লাখ টাকা পুজির দরকার নেই। খেয়াল খুশি মত ব্যবসা করলেও মাসে ১০/১৫ হাজার টাকা আয় হয়। বীচ কেন্দ্রিক বেশ কিছু দোকান আছে যেখান থেকে ওরা পানি,চিপ্স,জুস,সিগারেট এটা সেটা নিয়ে বিক্রি করে। একটি পানি ১৫ টাকা দিয়ে কিনে ২০ টাকায় বিক্রি করে। লাভ ৫ টাকা। ৪০টা পানি বিক্রি করলেও ২০০ টাকা লাভ। বলা চলে বিনা পুজিতেই এই দুইশো টাকা লাভ। কারণ বেশ কিছু দোকান আছে যারা কোনো রকম সিকিউরিটি মানি ছাড়াই ভ্রাম্যমান হকারদের এই সব পণ্য দিয়ে থাকে। বেচাবিক্রির পর তাদেরকে টাকাটা দিলেই হয়। এর বাইরে ঝাল মুড়ি, বাদাম,কাঁচা আম,আমড়া,পেয়ারা,চা,কফিও বিক্রি করা যায়। বিশেষ করে খাবার আইটেম সব সময়ই বিক্রি হয়। এগুলোর যে কোনোটার ব্যবসাই করা যায় এবং পুজি এক দুই হাজার টাকা হলেই হয়। যে মানুষটির কথা উল্লেখ করেছি তাকে আমি প্রথম যখন পরিচয় হয়েছিল এই সব কথা বলেছিলাম কিন্তু কেন জানি না এগুলো সে আমলে নেয়নি।
গতকাল সন্ধ্যার পর সায়মন বীচ রিসোর্ট থেকে বেরিয়ে বীচে নামতেই আবছা অন্ধকারে দেখলাম একটা আট বছর বয়সী ছেলে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কফি খাচ্ছে। দেখেই বুঝলাম সে কফি বিক্রি করে। আশেপাশে কেউ নেই। এগিয়ে গিয়ে বললাম কেমন আছো তুমি? ব্যবসা কেমন চলছে। এরকম আরও কিছু কথা হলো। তার থেকে জানতে পারলাম সে রোজ এক থেকে দেড় হাজার টাকার কফি বিক্রি করে। বিকেলে বেরিয়ে রাত দশটা বারটা পযর্ন্ত বিক্রি করে। এতে তার ৭০ শতাংশ লাভ থাকে। মানে এক হাজার বিক্রি করলে সাতশো টাকা লাভ। মাসে ২১ হাজার টাকা আয়! একটা ছোট্ট বাচ্চা সে কফি বিক্রি করে গড়ে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা আয় করছে অথচ শক্তসমর্থ এক যুবক যে কোনো ছুটি নেই,ঘুমানোর ব্যবস্থা নেই,কোনো আরাম নেই রোজ আট ঘন্টা ডিউটি করে বেতন পাচ্ছে মাত্র সাড়ে ছয় হাজার টাকা। এই মানুষদের কেন আক্কেল হয় না? পরে বুঝলাম তারা নাকি আত্মসম্মানের কারণে ওই সব বীচ কেন্দ্রিক ব্যবসা করতে পারে না। আমার বুঝে আসে না যে নিরাপত্তারক্ষির চাকরিতে আত্মসম্মান যায় না কিন্তু বীচকেন্দ্রিক ব্যবসা করলে আত্মসম্মান যায়! অথচ পান বিক্রি করলে,ঝাল মুড়ি বিক্রি করলে,বাদাম বিক্রি করলে বা চা কফি বিক্রি করলে সে ঘুরে বেড়াতে পারতো, পরিবারকে যথেষ্ট সময় দিতে পারতো, রাতে আরাম করে ঘুমাতে পারতো। মাঝে মাঝে চাইলেই এক দুদিন কাজ না করে ঘরে বসে থাকতে পারতো। এতো সব করেও তার আয় হতো অনেক অনেক বেশি।
এই যে এরা চাকরি ছেড়ে দিয়ে সংসার চালাতে না পেরে আবার সেই একই অফিসে গিয়ে হাউমাউ করে কেঁদে সাড়ে ছয় হাজার টাকার চাকরিটা পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছে এটাই আমার কাছে আশ্চর্যের বিষয় লাগে। যদি অনেক বেতন হতো,প্রেস্টিজিয়াস চাকরি হতো, উচ্চ শিক্ষিত হতো তাহলে আলাদা বিষয় ছিলো। কিন্তু সে যে চাকরির জন্য কান্নাকাটি করছে তাতে না আছে তেমন সম্মান, না আছে বেতন, না আছে সুখ। আপনারা যারা কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে গিয়েছেন তারা নিশ্চই দেখেছেন ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা কেমন ব্যবসা করছে। তারা বুঝলেও এই মানুষগুলো বুঝতে পারে না। টাকা আয়ের জন্য সৎ পথে পরিশ্রম করে আয় করার মানসিকতা থাকতে হবে। তবেই সুখ আসবে। এই মানুষটি সহ আরও যারা আছে তারা অনায়াসেই নিজেদের ভাগ্যের চাকা আগের তুলনায় ঘুরিয়ে নিতে পারে বিশেষ করে বীচ কেন্দ্রিক ব্যবসা করে।
আমার এই অংশের লেখা তাদের জন্য যারা মোটামুটি একটা চাকরির আশায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ঢাকায় ছুটে যাচ্ছে এবং গার্মেন্টস বা নিরাপত্তারক্ষি কিংবা ছোট খাটো চাকরির আশায় বসে আছে তাদের উচিত ঢাকার দিকে ছুটে না গিয়ে কক্সবাজার চলে যান। ওখানে একটা বাসা নিন তার পর চা,কফি,চিপ্স,আমড়া,পেয়ারা এসবের যে কোনোটা নিয়ে নেমে পড়ুন। ইনশা আল্লাহ একদম প্রথম দিনেই আপনি লাভবান হবেন। আপনি যে অল্প বেতনের চাকরির জন্য ঢাকায় যাচ্ছেন সেই চাকরিটা পেলেও বেতন এক মাস পরে হাতে পাবেন। কিন্তু এখানে প্রথম দিনই আপনি লাভের মুখ দেখবেন। আমার এই লেখাটি যারা পড়ছেন তাদের মধ্যে যারা অল্প শিক্ষিত কিংবা কর্মসংস্থান না থাকায় পরিবারের বোঝা হয়ে উঠেছেন,হতাশ হচ্ছেন তারা ৫/৬ হাজার টাকা যোগাড় করে কক্সবাজার চলে আসুন। বাস থেকে নেমেই আপনার ভাগ্য পরীক্ষায় নেমে পড়ুন। পেটে ভাত না থাকলে যাদের সামনে মানসম্মান নিয়ে চিন্তিত তারা কেউ এসে ভাত কাপড় দিবে না। এখানে অনেক কিছুই বিক্রি করা যায় এবং বেশ ভালো প্রফিট করা সম্ভব। হতাশ না হয়ে নিজের ভাগ্যটা একবার পরীক্ষা করে দেখুন।
যে সব জিনিস বিক্রি করা যেতে পারে এবং যা থেকে অতি অবশ্যই লাভ হবে।
কলা ( বদর মোকাম মসজিদের পাশের গালিতে কলার আড়ৎ আছে। যেখান থেকে মোটামুটি দামে কলা কিনতে পারবেন এবং বীচে বা শহরে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করতে পারবেন)
পানি,চিপ্স,বিস্কুট,জুস,সিগারেট ( লাবণী পয়েন্টের ওখানে গিয়ে যে কাউকে বলবেন মাটির দোকান কোনটা। দেখিয়ে দেবে। মাটি ভাইয়ের দোকান থেকে এই সব পণ্য আপনি নিতে পারবেন এবং বিক্রি করতে পারবেন)
দই ( ছোট ছোট কাপ দই ঝাকায় করে বীচে বিক্রি হয়। প্লাস্টিকের কাপ ২০ টাকা আর মাটির কাপ ২৫/৩০ টাকায় বিক্রি হয়। কেনা দাম পড়বে ১৫ টাকা। প্রতিদিন মিনিমাম ১০০ কাপ বিক্রি করতে পারবেন এবং তাও কয়েক ঘন্টা সময় নিলেই)।
হেয়ার ব্যান্ড ( বীচে দেখবেন মেয়েদের জন্য লাইট জ্বলে এমন হেয়ার ব্যান্ড বিক্রি হচ্ছে প্রতিটি ১০০ টাকা দামে। বাজারঘাটা থেকে ওগুলো পাইকারি ৪০ টাকা দিয়ে কিনতে পারবেন। অন্যরা ১০০ করে বিক্রি করছে আপনি ৬০ টাকা লাভ না করে ২০ টাকা লাভের চিন্তা নিয়ে ক্রেতা কেমন দাম দিতে চায় সেটা বিবেচনা করে বিক্রি করতে পারবেন। যারা ১০০ করে বিক্রি করছে তারাতো আর আপনাকে পাহারা দিচ্ছে না যে আপনি কত বিক্রি করছেন। দাম চাবেন ১০০ টাকা। কেউ যদি ৭০ টাকা দাম বলে তাও দিয়ে দিন। তবুওতো আপনার লাভ হবে ৩০ টাকা! ভাবা যায়? যদি ২০ টা বিক্রি করতে পারেন তাও নীট প্রফিট ৬০০ টাকা। মাসে ১৮ হাজার টাকা। সাথে বীচে ঘুরে বেড়ানোর আনন্দতো থাকলোই)।
কাঁচা আম,পেয়ারা,বাদাম ( এগুলো সবই বাজারঘাটা থেকে কিনতে পারবেন)
চা,কফি ( একটা ফ্ল্যাক্স কিনবেন, পানি চাইলে নিজে বাসা থেকে গরম করতে পারেন আবার চাইলে গরম পানি কিনেও নিতে পারবেন। এক প্যাকেট ১০ টাকা দামের নেসক্যাফে কফি দিয়ে আপনি অনায়াসে দুটো কফি বানাতে পারবেন। ওরা অবশ্য পাঁচটাকা দামের প্যাকেট দিয়ে একটা বানায়। সাথে দুধ চিনি। বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা করে। আপনি ৩০০ টাকার দুধ,চিনি,কফি,গরম পানি নিয়ে বের হলে দিন থেকে নিশ্চিত আপনার পুজির ওই তিনশো টাকার বাইরে আরও ৬০০ থেকে ১০০০ টাকা আয় করে ঘরে ফিরতে পারবেন)।
পুথি,মালা,ঝিনুক ( এগুলোর ব্যবসায় না নামাই ভালো কারণ এগুলো মানুষ হাটতে হাটতে কেনে না বরং দোকান থেকেই কিনতে পছন্দ করে)।
হাত পা মেসেজ করা ( আমি দেখেছি একদল ছোট ছোট ছেলে মেয়ে পর্যটকদের হাত,পা,মাথা মেসেজ করে দিয়েও বেশ ভালো টাকা আয় করছে)
গান শুনিয়ে ( একদল ছোট ছোট ছেলে মেয়ে পর্যটকদের গান শুনিয়েও আয় করছে)
এই দেশে একাধিক বার বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে,পত্রিকায় প্রতিবেদন হয়েছে এমন কিছু হকারের যারা স্মার্ট পোশাক পরে হকার হিসেবে ব্যবসা করছে। এটা একটা পজিটিভ দিক। সাধারণত হকার শ্রেণীর মানুষেরা খুব সাধারণ পোশাক পরে। কেউ যদি এই ধারার বাইরে গিয়ে একই পেশায় নিয়োজিত হয় তবে অন্যদের তুলনায় সে অধিক লাভবান হয় বা অধিক কাস্টমার পায়। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত শুধু ঘুরে বেড়ানোর জন্যই সুন্দর নয় বরং ছোট ছোট ব্যবসার জন্যও দারুন একটি স্থান। ঘরে বসে হতাশ না হয়ে আমার কথা মত এখানে এসে একবার ভাগ্যপরীক্ষা করে দেখতে পারেন। আশা করি সুফল পাবেন।
লজ্জার কিছু নেই।
খোদ আমেরিকার তৎকালিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার মেয়ে মালিয়া নিজেও তার অবসর সময়ে লাইব্রেরীতে,রেস্টুরেন্টে কাজ করে আয় করতো,অভিজ্ঞতা অর্জন করতো। সেই তুলনায় আমার আপনার বাবা প্রেসিডেন্টতো দূরের কথা ওয়ার্ড কাউন্সিলরও না। অবশ্য অন্য দেশের প্রেসিডেন্টের তুলনায় আমার দেশের ওয়ার্ড কাউন্সিলররা বেশি সাবলম্বি। এর আগে কোনো এক দেশের প্রধানমন্ত্রী তার পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন বেতনের টাকায় সংসার চলছে না এই অভিযোগে। সারা বিশ্বেই যা নিউজ হয়েছিল। আমাদের দেশে অবশ্য সেই সুযোগ নেই। ওয়ার্ড কাউন্সিলররাও এতো টাকার মালিক যে আলিশান বাড়ি,দামী গাড়ি তাদের কাছে নস্যি ব্যপার। যাই হোক অল দ্য বেস্ট। আমি কিন্তু এখনো উপার্জনের দ্বিতীয়,তৃতীয় এমনকি চতুর্থ কোনো ওয়ে থাকলে সেটাও গ্রহণ করতে চেষ্টা করি,যদি সেটা সৎ পথ হয়। এমনকি এই যে আমি ভালো বাংলা টাইপ করতে পারি উপযুক্ত সম্মানি পেলে আমি যে কারো বাংলা টাইপ করে দিতেও রাজি আছি। বসে বসে বেহুদা ফেসবুকে সময় নষ্ট করার বদলে যদি কারো বাংলা টাইপ করে এক দুশো টাকা পাওয়া যায় সেওবা মন্দ কী? আমার অবশ্য এই অভিজ্ঞতা বেশ পূরোনো।শুধু একটি প্রথম শ্রেণীর পত্রিকার জন্য খেটে খুটে কিছু কাজ করে দিই কোনো রকম সম্মানি ছাড়াই। তাদের উচিত ছিলো কিছু সম্মানি দেওয়া। সম্পাদককে ভালোবাসি এবং প্রিয় বিষয়ে কাজ বলেই বিনা পয়সায় ওটুকু করি। ৫ বছর ধরে করে দিচ্ছি। সবার সুন্দর আগামী প্রত্যাশা করছি। পৃথিবীতে শান্তি বিরাজ করুক।
-জাজাফী
৯ জুন ২০২২